খালেদা জিয়া হাসপাতালে চিকিৎসকদের ‘সার্বক্ষণিক নিবিড় পর্যবেক্ষণে’ রয়েছেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন এই তথ্য জানিয়েছেন।
আজ সোমবার সকালে জাহিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসকদের বোর্ড তাঁকে সার্বক্ষণিক নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছে। তিনি জানান, চিকিৎসকদের বোর্ড এখন দিনে দুই থেকে তিনবার বৈঠক করে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা দিচ্ছে।
জাহিদ হোসেন উল্লেখ করেন, হাসপাতালের কেবিনে রেখেই খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে দেখতে গিয়েছিলেন। সেই সময় মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ১০ আগস্ট তাঁর স্বাস্থ্যের পরীক্ষা করাতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। সেদিনই চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
গত জুন মাসেও তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। সে সময় তাঁকে পাঁচ দিন হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল।
গত বছরের জুন মাসে খালেদা জিয়ার অ্যানজিওগ্রাম করা হলে তাঁর হৃদ্যন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়।
৭৮ বছর বয়স্ক খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার ও হৃদ্রোগে ভুগছেন। তাঁর পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ ও লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকেরা।
২০২১ সালের এপ্রিলে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে কয়েকবার নানা অসুস্থতার কারণে তাঁকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের সাজা হয়। সেদিন থেকে তিনি কারাবন্দী হন। পরে হাইকোর্টে এই সাজা বেড়ে ১০ বছর হয়। এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার আরও সাত বছরের সাজা হয়।
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার খালেদা জিয়ার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে। সেই থেকে তিনি গুলশানের বাড়িতে রয়েছেন। ছয় মাস পরপর সরকার তাঁর মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে।