রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, নিহত ব্যক্তির নাম মকবুল আহমেদ। তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হওয়া ব্যক্তির পূর্ণাঙ্গ পরিচয় জানা যায়নি।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, বেলা সাড়ে চারটা পর্যন্ত নয়াপল্টনের সংঘর্ষে আহত আটজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে আনা হয়। তাঁদের মধ্যে মকবুল মারা গেছেন। অন্যদের মধ্যে চারজনের নাম পাওয়া গেছে, তাঁরা হলেন রনি, মনির, আনোয়ার ইকবাল ও খোকন।
প্রথম আলোর ঢাকা মেডিকেল প্রতিনিধি জানান, রক্তাক্ত অবস্থায় মকবুলকে এক ব্যক্তি হাসপাতলে নিয়ে আসেন, যিনি নিজের নাম মোস্তাফিজুর রহমান বলে জানিয়েছেন। ওই ব্যক্তির দাবি, তিনি পথচারী, রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে মকবুলকে তিনি হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
আজ বুধবার বেলা তিনটার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। বিকেল সোয়া চারটার দিকে পুলিশ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান শুরু করে।
এরে আগে সকাল থেকেই নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে দলটির নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে জমায়েত বড় হয়ে রাস্তার এক পাশ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দিতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে পুলিশ শটগানের গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় অনেকে আহত হন। বিএনপির দাবি, তাদের বেশ কয়েকজনকে পুলিশ আটক করেছে।
ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে বিকেল চারটায় ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দা সুমাইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গা থেকে আমরা এসেছি। নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে মিছিল করছিলাম। পুলিশ অতর্কিতভাবে দুই দিক থেকে আমাদের ওপর হামলা করে। ছররা গুলি ও কাঁদানের গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। এখন আমাদের যাকে যেখানে পাচ্ছে, পুলিশ তুলে নিয়ে যাচ্ছে।’
ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল জোনের ডিসি হায়াতুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সমাবেশের স্থান নিয়ে যখন আলোচনা চলছে, তখন এই সংঘর্ষ শুরু হলো। আজ পল্টনে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ভিড় করতে শুরু করে। একপর্যায়ে পুরো রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। আমরা তাদের সরে যেতে বারবার অনুরোধ করি। কিন্তু তারা আমাদের কথা শোনেনি। একপর্যায়ে তাদের সরিয়ে দিতে গেলে তারা পুলিশের ওপর হামলা করে।’
তবে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে বিএনপির নেতা–কর্মীদের ওপর পুলিশের এ গুলি চালানো সম্পূর্ণ পরিকল্পিত।