ফরিদপুর-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান ওরফে নিক্সন চৌধুরী নির্বাচন করছেন ঈগল প্রতীকে। তিনি যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। আর নৌকার প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহ। তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। নৌকা ও ঈগলের প্রার্থী জাফর-নিক্সনে বিভক্ত সেখানকার আওয়ামী লীগ। নির্বাচনী প্রচারণায় দুই প্রার্থীর বাগ্যুদ্ধে অনেক সময় পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। সেখানকার ভোট ও রাজনীতি নিয়ে প্রথম আলো কথা বলেছে নিক্সন চৌধুরীর সঙ্গে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ কেমন দেখছেন?
নিক্সন চৌধুরী: নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু দেখা যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ প্রশাসনের ওপর চাপ আসছে। কারণ, ১০ দিনের মধ্যে এক থানা থেকে দুজন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদলি হয়ে গেল। পুলিশ সুপার (এসপি) বদলি হয়ে গেল। সদরপুর উপজেলায় ওসি বদলি হয়ে গেল। ওসি বদলির কারণে জনগণের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। এটার দিকে নির্বাচন কমিশনের নজর দেওয়া উচিত। কারণ, এক সপ্তাহের মধ্যে ওসি পরিবর্তন হলে মানুষ অন্য কিছু ভাববে। সরকারি দলের প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহ প্রচার করে বেড়াচ্ছেন তাঁর ক্ষমতা অনেক বেশি। এটাকে প্রমাণ করার জন্য এসব হচ্ছে। জাফর উল্যাহ নিজের ক্ষমতা দেখানোর জন্য পুলিশ প্রশাসনে বদলি করেছেন। জনগণের ক্ষমতা তাঁর নেই। তাই বিকল্প পথে হাঁটছেন। নির্বাচন কমিশনের এই আচরণে সবাই বিক্ষুব্ধ।
নির্বাচনের দিন ভোটারদের অনেকে কেন্দ্রে যাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন। আপনি বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
নিক্সন চৌধুরী: আমার নির্বাচনী এলাকা অন্য রকম। অন্য আসনগুলোর সঙ্গে এ আসনের তুলনা করা ঠিক হবে না। এখানে মানুষ ভোট দিতে আসবে। ২০১৪ সালের নির্বাচন এবং ২০১৮ সালে নির্বাচনে তা–ই হয়েছে। প্রচুর ভোটার এসেছে কেন্দ্রে। এবারও তা–ই হবে। তবে জাফর উল্যাহকে কেউ ভোট দিতে আসবেন বলে মনে হয় না। নির্বাচনটা একটা চ্যালেঞ্জ। আর কোনো কিছুই চ্যালেঞ্জ নয়।
আপনার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহ অভিযোগ করেছেন, নির্বাচনী হলফনামায় আপনি তথ্য গোপন করেছেন। আপনার সম্পত্তি আরও বেশি। এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী?
নিক্সন চৌধুরী: গতবার হলফনামায় আমার স্ত্রীর সম্পত্তির তথ্য দেওয়া হয়নি। এবার দেওয়া হয়েছে। সে কারণে সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে।
আপনার বিরুদ্ধে খাসজমি ও সংখ্যালঘুদের জমি দখলের অভিযোগ আছে? এ বিষয়ে কী বলবেন?
নিক্সন চৌধুরী: একজন প্রার্থী আরেকজন প্রার্থী নিয়ে কথা বলবেন। এটাই স্বাভাবিক। উনি (জাফর উল্যাহ) প্রমাণ করুক যে চরভদ্রাসন ও সদরপুরে কারও জমি দখল হয়েছে। উনি যেসব অভিযোগ করছেন, তার আগে আয়নায় নিজের চেহারা দেখুক। জাফর উল্লাহ সার কারখানা থেকে কমিশন খেয়েছেন। টাকা পাচার করেছেন। তাঁর কমিশন খাওয়ার বিষয়টি পত্রিকায় এসেছে। তাঁর নামে মানি লন্ডারিং মামলা হওয়া উচিত। উনি নিজেকে ঢাকার জন্য এসব কথা বলছেন। আমার নামে কারও জমি দখলের ইতিহাস নেই।
আগের দুই নির্বাচনে কাজী জাফর উল্যাহকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন। এবার কী মনে হচ্ছে?
নিক্সন চৌধুরী: আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জাফর উল্যাহ মাঠেই ছিলেন না। নির্বাচনের তিন মাস আগে এলাকায় এসেছেন। জনগণ এত বোকা নয়। জনগণের সুখে–দুঃখে সব সময় যাকে পাবে, তাকে ভোট দেবে। গতবারের চেয়ে এবার ভোটের ব্যবধান বেশি হবে।
সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
নিক্সন চৌধুরী: আপনাকেও ধন্যবাদ।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আরিফুর রহমান ও প্রবীর কান্তি বালা।