আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের

আলোচনার আগে জাপার সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে মন্তব্য নেই: কাদের

জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনা হওয়ার আগে আসন ভাগাভাগি সম্পর্কে কিছু বলতে চান না আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টি একসময় আমাদের মহাজোটে ছিল। তারা নির্বাচন করছে। সুতরাং আলোচনা হওয়ার আগে কিছু বলা সম্ভব নয়।’

আজ বুধবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজনীতির ভিন্নমত থাকাটাই হচ্ছে গণতন্ত্র। একমত হতে না পারা, সেটাই গণতন্ত্র। ১৪ দলের সঙ্গে ইতিমধ্যে আলোচনা হয়েছে। দু–এক দিনের মধ্যেই আসনের বিষয়টি ঠিক হবে। আর জাতীয় পার্টি একসময় আমাদের মহাজোটে ছিল। তারা নির্বাচন করছে। সুতরাং আলোচনা হওয়ার আগে কিছু বলা সম্ভব নয়।’

জাতীয় পার্টি ও ১৪ দল, সবাই সরকারের সঙ্গে মিশে যেতে চাইছে এবং নির্বাচনের নিশ্চয়তা চায়। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখানে মিশে যাওয়ার কোনো ব্যাপার নেই। জাতীয় পার্টি প্রায় ৩০০ আসনে প্রার্থী করেছে। আর আসন ভাগাভাগির ব্যাপারে বাস্তবতা রয়েছে। সেটা আলোচনার বিষয়।

তাহলে কি জাতীয় পার্টি ও ১৪ দল আসন ভাগাভাগি করে বিরোধী দল হবে? জবাবে তিনি বলেন, সময় হলে বিরোধী দল দাঁড়িয়ে যাবে। তা ছাড়া এখানে আরও অনেক দল আছে। তৃণমূল বিএনপি, বিএনএম, সুপ্রিম পার্টিসহ বিভিন্ন দল রয়েছে।

জাতীয় পার্টি ও ১৪–দলীয় জোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি হলে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ কারা হবে? জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব প্রতিদ্বন্দ্বী আমাদের প্রতিপক্ষ। যারা নির্বাচন করছে, তারা সবাই পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী। আমাদের দলের সভাপতির আসনে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিযোগিতা তো হচ্ছে।’

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন নির্বাচন কমিশনের অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যাপারে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই। এখন সরকার শুধু একটি রুটিন দায়িত্ব পালন করছে। সরকারের কাজ হচ্ছে একটি সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করা।

১০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সমাবেশ করছে না জানিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন কমিশন মানবাধিকার দিবসে সমাবেশ করার অনুমতি দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছে। আওয়ামী লীগ সমাবেশ করবে না। তবে দিবসটি ঘিরে আওয়ামী লীগের ঘরোয়া কর্মসূচি থাকবে বলে জানান তিনি।

মানবাধিকারের কথা বলে জনসম্পৃক্ততার অভাবে নির্বাচনবিরোধী দলগুলোর আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আজকে আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে অগ্নিসন্ত্রাস ও নাশকতা করে আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। মানবাধিকার দিবসে সারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা নিয়ে তারা এগোচ্ছে। জামায়াতকে বিএনপি একান্তভাবে তাদের পাশে চায়।

মানবাধিকার দিবসে বিএনপি নাশকতা করতে পারে—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা খোঁজখবর নিয়েই কথা বলছি। সরকারি দল হিসেবে আমাদের খোঁজখবর নেওয়ার সুযোগটা বেশি। তা ছাড়া বিভিন্ন সূত্র থেকে আমরা ইতিপূর্বে যেসব খবর পেয়েছি, বাস্তবেও সেগুলোর মিল পেয়েছি।’

বিএনপির সমালোচনা করে সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আসলে বাস্তবতা হচ্ছে, বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে ভুলের মধ্যে আছে। জামায়াতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সূত্রে তারা যেভাবে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে, তাতে একসময় দেখা যাবে, বিএনপির রাজনীতির যে মূলধারা, সেখানে নেতৃত্ব দিচ্ছে জামায়াত। আর বিএনপি এটার বি টিম হিসেবে আবির্ভূত হবে। বিএনপির ভুলের রাজনীতির কারণেই তারা জামায়াতের বি টিমে পরিণত হবে।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ।