বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হৃদ্যন্ত্রে স্থায়ী পেসমেকার বসানোর পরদিন আজ তাঁর স্বাস্থ্যের কিছু পরীক্ষা করা হবে।
আজ সোমবার খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, রোববার বিকেলে পেসমেকার বসানোর পর থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে সিসিইউ সুবিধা দিয়ে আইসোলেশনে বা সম্পূর্ণ আলাদাভাবে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। সেখানেই তাঁর স্বাস্থ্যের কিছু পরীক্ষা করা হবে।
বিএনপি নেত্রীর মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা বোর্ডের সদস্যরা আজই খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের নতুন কিছু পরীক্ষার পর সেগুলোর রিপোর্ট পর্যালোচনা করবেন। পেসমেকার বসানোর পর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়নি। ফলে তাঁকে আইসোলেশন বা বিচ্ছিন্ন অবস্থা থেকে সিসিইউতে বা কেবিনে নেওয়া যায় কি না, সে ব্যাপারে আজ স্বাস্থ্যের বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করবেন চিকিৎসকেরা।
গতকাল রোববার বিকেলে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর হৃদ্যন্ত্রে স্থায়ী পেসমেকার বসানো হয়।
খালেদা জিয়ার হৃদ্রোগের সমস্যা আগে থেকেই ছিল। হার্টে তিনটি ব্লক ছিল। আগে একটা রিং পরানো হয়েছিল। সবকিছু পর্যালোচনা করে বিদেশি চিকিৎসক ও মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে পেসমেকার বসানো হয়েছে বলে তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক জানান।
গত শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, হৃদ্রোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।
এর আগে গত ২ মে খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই সময় চিকিৎসকেরা তাঁকে সিসিইউতে রেখে দুই দিন চিকিৎসা দিয়েছিলেন।
গত বছরের ৯ আগস্ট খালেদা জিয়াকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তখন পাঁচ মাসের বেশি সময় চিকিৎসা শেষে গত ১১ জানুয়ারি তিনি বাসায় ফেরেন। সে সময় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে নিতে তাঁর পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও অনুমতি পাওয়া যায়নি। এমন পরিপ্রেক্ষিতে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে খালেদা জিয়ার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তাঁর স্বাস্থ্য কিছুটা স্থিতিশীল হলে সে দফায় পাঁচ মাসের বেশি সময় পর তাঁকে বাসায় নেওয়া হয়েছিল।
দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপারসন ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দী হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দী ছিলেন তিনি। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাজা ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিল। তখন থেকে ছয় মাস পরপর তাঁর সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।