বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ বুধবার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে দুর্গাপূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ বুধবার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে দুর্গাপূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেন

বিএনপি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশে ছিল, থাকবে: মির্জা ফখরুল

বিএনপির পক্ষ থেকে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘এটুকু বলতে পারি, অতীতে যেমন আমরা আপনাদের সঙ্গে ছিলাম, আপনাদের প্রতিটি সমস্যায় পাশে এসে দাঁড়িয়েছি, ঠিক একইভাবে আগামীতেও আমরা আপনাদের সঙ্গে থাকব।’

আজ বুধবার সকালে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে দুর্গাপূজা মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি সনাতন ধর্মাবলম্বী প্রতিনিধিদের সঙ্গে দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটি ‘অসুর’ শক্তির পতন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘দেবী দুর্গার আবির্ভাব হয়েছে পৃথিবীতে অসুর শক্তিকে বধ করার জন্য। মানুষে মানুষে ভাতৃত্ব ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠার জন্য। হিংসা, প্রতিশোধ, প্রতিহিংসাকে দূর করে ভালোবাসার প্রেমের সমাজ নির্মাণ করার জন্য। আজকে সেই সুযোগ আমাদের সামনে এসেছে।’

আওয়ামী লীগের নাম উল্লেখ না করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘তারা বলে থাকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের তারাই নাকি সবচেয়ে ভালো বন্ধু। কিন্তু আপনারা যদি দেখেন, অতীতে যতগুলো ঘটনা ঘটেছে, তার নেতৃত্বে তাদের লোকেরাই ছিল। বাংলাদেশে আপনাদের সম্প্রদায়ের যত জমি, সম্পত্তি দখল করে নেওয়া হয়েছে, তার মূলেও তারাই ছিল। এই কথাটা বলতে পারি, আগামীতে আমাদের সরকার যখন প্রতিষ্ঠিত হবে, প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে বিচারের ব্যবস্থা করব।’

এই পরিবর্তনের সুযোগ সবাইকে নিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। এ দেশটা কারও একার নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধ করেছিলাম, বাংলাদেশকে আমরা সত্যিকার অর্থেই একটা অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ নির্মাণ করব। সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি।’

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সহিংসতায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বহু মানুষ আক্রান্ত হন। তারপর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সংগঠনগুলো এসব ঘটনায় বিচার ও ক্ষতিপূরণসহ মোট আট দফা দাবিতে আন্দোলন করে।

এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আপনাদের আট দফাকে অবশ্যই বিবেচনা করছি। মূল বিষয়ের প্রতি সর্বাত্মক সহনুভূতি আমাদের রয়েছে।’
অভ্যুত্থানের পর মানুষের মধ্যে যখন পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হয়েছে, সে সময় বিদেশি কিছু প্রচারমাধ্যম বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছে, যা একেবারেই সত্য নয় বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘ঘটনা ঘটেনি সে কথা আমি বলব না। কিছু ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সম্পূর্ণভাবে তা কোনো সাম্প্রদায়িক ঘটনা ছিল না, তা ছিল রাজনৈতিক ঘটনা।’

সরকারের কাছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের ক্ষতি পূরণ দেওয়ার দাবি জানান মির্জা ফখরুল। তিনি ছাত্র–জনতার আন্দোলনে হতাহত ব্যক্তিদের ক্ষতি পূরণ ও ভরণপোষণ দেওয়ার দাবিও জানান।

এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেনসহ দলটির অনেকে উপস্থিত ছিলেন। সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।