আবদুস সাত্তারকে ধরে রাখতে না পারা বিএনপির ব্যর্থতা: তথ্যমন্ত্রী

সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তর সম্মেলনকক্ষে ‘উন্নয়নের নব দিগন্ত’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
ছবি: সংগৃহীত

উকিল আবদুস সাত্তারকে ধরে রাখতে না পারাকে বিএনপির বড় ব্যর্থতা বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচনে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন বিএনপির দলছুট নেতা আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া।

মাগুরার নির্বাচনকেও হার মানিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাচন, বিএনপির মহাসচিবের এমন মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তর সম্মেলনকক্ষে ‘উন্নয়নের নব দিগন্ত’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। তথ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সেখানে যেহেতু আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী ছিল না, সেহেতু আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকেরা যে কাউকেই পছন্দ করতে পারেন। সেটি তাঁদের নিজস্ব ব্যাপার। সেখানে কারও জন্য কাজ করার দলীয় কোনো নির্দেশনা ছিল না। যে যাঁর পছন্দমতো প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন। আর ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসনে আমরা প্রার্থী দিইনি, সুতরাং সেখানে উকিল আবদুস সাত্তার সাহেবকে বিএনপি ধরে রাখতে পারেনি, এটা তো বিএনপিরই বড় ব্যর্থতা।’

১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ৬টি আসনের উপনির্বাচন নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মাত্র ৩টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিলাম এবং সেই সব আসনে আমাদের প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে জয়লাভ করেছেন এবং নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু ও সুন্দর হয়েছে। উপনির্বাচনে সব সময় ভোটার উপস্থিতি কম থাকে। যেখানে এক বছরের কম সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হবে, সেই বিবেচনায় এই উপনির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি খুব কম নয় এবং অত্যন্ত সুষ্ঠু, সুন্দরভাবে নির্বাচন হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ৪০ শতাংশ মানুষ ভোটার হন না। আবার যাঁরা ভোটার হন, সেখান থেকে অর্ধেক উপস্থিত হন। সার্বিকভাবে ২৫ শতাংশ ভোট পড়ে সেখানে। যেহেতু উপনির্বাচনে এক বছরে কম সময়ের জন্য এমপি নির্বাচিত হবেন, এ হিসাবে ভালো হয়েছে।’

বিএনপির কোমর ভেঙে গেছে
তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, সরকারকে ধাক্কা মারতে গিয়ে বিএনপির যে কোমর ভেঙে গেছে, তাদের বর্তমান কর্মকাণ্ডের মাধ্যমেই তার পরিস্ফুটন হয়েছে। কিন্তু বিএনপির ষড়যন্ত্র থেমে নেই। তাদের ষড়যন্ত্র সব সময় ছিল, এখনো আছে।

গত ডিসেম্বরের পর বিএনপির কর্মচাঞ্চল্য নেই, এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি বলেছিল, ডিসেম্বর মাসেই সরকারকে বিদায় করে দেবে, সরকারকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেবে। কিন্তু সরকারকে ধাক্কা দিতে গিয়ে তারা নিজেরাই পড়ে গেছে। এর পর থেকে তারা এখন হাঁটা শুরু করেছে। বিএনপি অনুধাবন করতে পেরেছে যে সরকারকে ধাক্কা মারলে লাভ হয় না; সরকারের ভিত, আওয়ামী লীগের ভিত অনেক গভীরে প্রোথিত। আশা করব, বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্যেই থাকবে, গণতন্ত্রের পথেই হাঁটবে।’

সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ২০০৮ সালে নির্বাচনে ২৯টি আসন পেয়েছিল, পরে উপনির্বাচনে ৩০টি অতিক্রম করেছে। ২০১৪ সালে নির্বাচন বর্জন করেছিল। ২০১৮ সালে ৬টি আসন পেয়েছিল। আগামী নির্বাচনেও তাদের সম্ভাবনা যে নেই, সেটি তারা জানে। জানে বলেই তারা নির্বাচন নিয়ে, নির্বাচনকে বিতর্কিত করার জন্য, প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এবং মানুষকে নির্বাচনবিমুখ করার জন্য নানা ধরনে কথাবার্তা বলছে।

‘উন্নয়নের নব দিগন্ত’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন
এর আগে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের ওপর ৪৫টি ফিচারের সংকলন নিয়ে তথ্য অধিদপ্তর প্রকাশিত ‘উন্নয়নের নব দিগন্ত’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহেনুর মিয়া, সিনিয়র উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা মুন্সী জালাল উদ্দীন এতে অংশ নেন।