মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান বলেছেন, রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে আগে থেকেই ফৌজদারি মামলা থাকলে তা আদালতে স্বাভাবিক গতিতে চলবে। কিন্তু অযথা নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলার অভিযোগ পাওয়া যায়। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের স্বচ্ছ মনোভাব দেখাতে হবে। নির্বাচনে প্রার্থী বা নেতা–কর্মীদের মধ্যে যেন কোনো ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়টাও বিবেচনায় রাখতে হবে।
আজ শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবন মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) সঙ্গে মতবিনিময়ে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান এসব কথা বলেন। পরে তাঁর ওই বক্তব্যের লিখিত অনুলিপি সাংবাদিকদের দেওয়া হয়। জেলা পরিষদ নির্বাচন ও অন্যান্য নির্বাচন সামনে রেখে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই মতবিনিময়ের আয়োজন করে ইসি।
আহসান হাবিব খান তাঁর বক্তব্যে বলেন, নির্বাচনের আগে–পরে রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মীদের পক্ষ বা বিভিন্ন মহল থেকে নানা ধরনের গুজব বা অপপ্রচার ছড়ায়। অনেক মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করে বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। কোনো গুজবের সন্ধান পেলে বা এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হলে তা শনাক্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশে আহসান হাবিব বলেন, নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নীতিমালা অনুসরণ করে খবর সংগ্রহের জন্য গণমাধ্যমকর্মীরা সারা দেশে কর্মরত থাকেন। তাঁরা নির্বাচনী এলাকার এবং বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রের সংবাদ সংগ্রহ করে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচার করেন। তাঁদের কাজে যাতে বাধা সৃষ্টি না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছভাবে, সেটাই গণমাধ্যমকর্মীরা তুলে ধরবেন সারা দেশের মানুষের কাছে। মনে রাখতে হবে গণমাধ্যমকর্মীরা তাঁদের কাজে অযৌক্তিক বাধাপ্রাপ্ত হলে বিভিন্ন মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে। বিষয়টির ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করতে হবে।
এই কমিশনার আরও বলেন, নির্বাচনের সময় অনেক প্রভাবশালী মহল বা রাজনৈতিক দলের নেতা, সাবেক–বর্তমান মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ নানা মানুষ এলাকায় প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ নির্বাচনের সময় অনেকে পেশিশক্তি, অর্থশক্তি বা ক্ষমতা প্রদর্শনের চেষ্টা করেন। কালোটাকার ব্যবহারে কথাও শোনা যায়। এ বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
ডিসি–এসপিদের উদ্দেশে আহসান হাবিব খান বলেন, কখনো দলীয় মনোভাব পোষণ করা যাবে না বা রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মীদের দ্বারা প্রভাবিত হওয়া যাবে না। দায়িত্ব পালনে প্রার্থী, রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের আস্থা অর্জন করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কখনো অতি উৎসাহী হয়ে এমন কোনো আচরণ করবেন না, যাতে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে এবং নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।