লোগোটি জামায়াতে ইসলামীর এক্স (সাবেক টুইটার) থেকে নেওয়া
লোগোটি জামায়াতে ইসলামীর এক্স (সাবেক টুইটার) থেকে নেওয়া

‘গণহত্যার’ দায় এড়াতে সহিংসতার দোষ চাপাচ্ছে সরকার: জামায়াত

সরকার গণহত্যার দায় এড়াতে ও জনরোষ থেকে বাঁচার জন্য জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবিরসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের ওপর সহিংসতার দোষ চাপানোর চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মা’ছুম। আজ শুক্রবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি করেন।

এ টি এম মা’ছুম বলেন, সরকার মিডিয়ার সামনে মায়াকান্না করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টায় নিয়োজিত আছে। দেশবাসী মনে করে, সরকার নিজেদের সৃষ্ট বীভৎস তাণ্ডব ধামাচাপা দেওয়ার জন্য মিথ্যাচার শুরু করেছে। কিন্তু মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালিয়ে দেশের নাগরিকদের ও বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। সহিংসতার সব দায়দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে। প্রতিটি গণহত্যার হিসাব দিতে হবে। তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘হুমকি-ধমকি দিয়ে কোনো লাভ হবে না। সরকারের সব চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে গেছে। বিভ্রান্তি না ছড়িয়ে দেশে শান্তি-স্বস্তি ফিরিয়ে আনুন।’

নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করে মা’ছুম বলেন, দেশে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। অথচ দেশবাসী ভালো করেই জানে, সরকার নিজেই উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সহিংসতায় রূপ দিয়ে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের মাঠে নামিয়ে গণহত্যা সংঘটিত করা হয়েছে। ক্যাম্পাস ও রাজপথ রক্তে রঞ্জিত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের শত শত মায়ের বুক খালি করেছে এবং হাজার হাজার মানুষকে পঙ্গু করে দিয়েছে। এখনো বহু শিক্ষার্থী নিখোঁজ রয়েছে। ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে দমনের জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলকে জড়িয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

বিবৃতিতে এই জামায়াত নেতা গণগ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলা দায়ের এবং জুলুম-নির্যাতনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

ধ্বংসযজ্ঞের বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত দাবি করল ছাত্রশিবির

পৃথক বিবৃতিতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ক্ষমতাসীন দলের ‘গণহত্যার’ দায় এড়াতে এবং শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ‘অবৈধ সরকার’ ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। তাঁরা বলেন, মূলত আওয়ামী লীগের প্রধান ও তাঁর জ্যেষ্ঠ নেতাদের উসকানি এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ খুনের হুকুমে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। সুতরাং দেশের অরাজক পরিস্থিতির দায়ভার বিরোধী দলের ওপর চাপিয়ে দিয়ে এ গণহত্যার দায় এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।

‘ধ্বংসাত্মক কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ছাত্রশিবিরের কোনো সম্পর্ক নেই’ দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, গণহত্যাকে জায়েজ করতেই বিশৃঙ্খলার দায় বরাবরের মতো ছাত্রশিবিরসহ বিরোধী দলের ওপর চাপানোর অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। দেশের মানুষ জানে জ্বালাও-পোড়াও কারা করে, এর বেনিফিশিয়ারি কারা। ছাত্রশিবির লক্ষ্য করছে, সরকারি প্রোপাগান্ডার সঙ্গে সুর মিলিয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কতিপয় কর্মকর্তা ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন, হুমকি দিচ্ছেন; যা কোনো পেশাদার রাষ্ট্রীয় বাহিনীর বৈশিষ্ট্য হতে পারে না।

বিবৃতিতে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কারা জড়িত, তা বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান শিবিরের দুই নেতা।