সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের খাদ্যমন্ত্রী মো. কামরুল ইসলাম দায়িত্বে থাকার সময় ব্রাজিল থেকে নিম্ন মানের গম আমদানি করে সরকারের বিপুল টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তাঁর নিজের নামে রাজধানীতে রয়েছে বাড়ি, ফ্ল্যাট ও বেশ কয়েক কাঠা জমি। আরও আছে দুটি টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার গাড়ি। এ ছাড়াও নিজের নামে ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের নামে দেশে-বিদেশে অঢেল সম্পদ গড়ে তুলেছেন বলে দুদকের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।
এদিকে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। ঝালকাঠিতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অফিস সহকারী, নৈশপ্রহরী ও আয়া নিয়োগ দিয়ে কোটি কোটি ঘুষ নিয়েছেন। এ ছাড়া সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ঠিকাদারের কাজ করা ব্যক্তিদের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে টাকা আদায় করেছেন। তাঁর নামে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ও বিনিয়োগ রয়েছে ১১ কোটি ৩২ লাখ টাকার বেশি। এ ছাড়া তাঁর নিজের নামে ২০ কোটি ৩২ লাখ টাকার বেশি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ রয়েছে।
এই দুজনের বিরুদ্ধে এসব অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার তাঁদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়। দুদকের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান।
দুদক সূত্র জানায়, কামরুল ইসলাম আইন প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে নিম্ন আদালতে কর্মচারী নিয়োগে দুর্নীতি-অনিয়মের মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকার ঘুষ নিয়েছেন। খাদ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায় ব্রাজিল থেকে নিম্নমানের গম আমদানি করে সরকারের বিপুল টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তাঁর নিজের নামে রাজধানীর ৪৮/১ নম্বর আজগর লেনে একটি চারতলা বাড়ি, মিরপুর আবাসিক এলাকায় দুটি ফ্ল্যাট, মিরপুর হাউজিং এস্টেটে ৪ কাঠা জমি, নিউ টাউনে ১০ কাঠা জমি, দুটি টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার গাড়ি (নম্বর-ঢাকা মেট্রো-ঘ, ১৫-৭৭০৭ এবং ঢাকা মেট্রো-ঘ, ১২-১৪৩৫) রয়েছে। কামরুল ইসলাম নিজ ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের নামে দেশে-বিদেশে অঢেল সম্পদ গড়ে তুলেছেন। এ ছাড়া তিনি ও তার অন্যান্য আত্মীয়স্বজনের নামে-বেনামে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রচুর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মালিক হয়েছেন।
আমির হোসেন আমু তাঁর নির্বাচনী এলাকা ঝালকাঠি-২-এ বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী, নৈশপ্রহরী ও আয়া নিয়োগ দিয়ে কোটি কোটি ঘুষ নিয়েছেন। ঝালকাঠির এলজিইডি, শিক্ষাপ্রকৌশল ও গণপূর্ত অধিদপ্তরসহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ঠিকাদারের কাজ করা ব্যক্তিদের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে টাকা আদায় করেছেন। ঢাকার ধানমন্ডি এলাকায় তাঁর নিজ নামে দুটি ফ্ল্যাট, মিরপুরে বাণিজ্যিক প্লট ও সাভারে অকৃষি জমি রয়েছে। তাঁর নামে ব্যাংক,আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ও বিনিয়োগ রয়েছে ১১ কোটি ৩২ লাখ টাকার বেশি। তাঁর নিজের নামে ২০ কোটি ৩২ লাখ টাকার বেশি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। এ ছাড়া তিনি স্ত্রী ও অন্যান্য আত্মীয়স্বজনের নামে-বেনামে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।