জাতীয় পার্টিকে আগে ‘গৃহপালিত’ বিরোধী দল বলা হতো, এখন ‘ক্রীতদাস’ বলা হয় বলে মন্তব্য করেছেন রওশন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ। তিনি দলের বিভক্তি ও নেতৃত্বের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘এই পার্টির ভবিষ্যৎ অন্ধকার। জাতীয় পার্টির ওপর মানুষের আস্থা নেই। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি এ পার্টিকে কীভাবে গুছিয়ে রাখা যায়।’
আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয় নগরের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে কাজী ফিরোজ রশীদ এসব কথা বলেন।
জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি থেকে সম্প্রতি অব্যাহতি পাওয়া এই নেতা দেশে ‘দুর্বৃত্তায়িত’ রাজনীতির সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, বর্তমানে হঠাৎ করে বড়লোক হওয়ার একমাত্র পথ হচ্ছে রাজনীতি। যাঁদের টিন (টিআইএন) ছিল না, তাঁরা আজ প্রাডো গাড়ি চালান। রাতারাতি কোটি টাকার মালিক বনে যাচ্ছেন।
রাজনীতি নিয়ে এভাবে অপরাজনীতি চললে দেশ ব্যবসায়ীদের হাতে চলে যাবে বলে মন্তব্য করেন কাজী ফিরোজ। তিনি বলেন, আজ দেশের অর্থনীতি ও ব্যাংক খাতে বিপর্যয় নেমে এসেছে। বড় বড় ব্যাংক ছোট ছোট ব্যাংক গিলে খাচ্ছে। বড় বড় কোম্পানিতে অভ্যন্তরীণ কোন্দল লাগিয়ে তা গিলে খাওয়া হচ্ছে। এ সব বিষয়ে আজ সংসদে কথা হচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে বিগত সংসদে সরব থাকা জাতীয় পার্টির এই নেতা দলের কড়া সমালোচনা করে বলেন, ‘আগে জাতীয় পার্টিকে বলা হতো গৃহপালিত বিরোধী দল। আর এখন বলা হয় কৃতদাস। এ পার্টির ভবিষ্যৎ অন্ধকার। জাতীয় পার্টির ওপর মানুষের আস্থা নেই। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি এ পার্টিকে কীভাবে গুছিয়ে রাখা যায়।’
কোনো দলের নাম উল্লেখ না করে কাজী ফিরোজ রশীদ আরও বলেন, ‘আগামীতে দুটি মার্কা ছাড়া অন্য মার্কা খুঁজে পাওয়া যাবে না। আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেননও নিজেদের মার্কা বাদ দিয়ে নৌকায় উঠেছেন। তারপরও অনেককে ডুবে যেতে হয়েছে। কারণ, নির্বাচন এখন নির্বাচনে নেই, একটি দলের মধ্যেই নির্বাচন হয়।
আগামীকাল শনিবার রাজধানীতে একটি পরিচিতি সভা ছিল রওশন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির। এই সভা স্থগিত করার ঘোষণা দিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে পরিচিতি সভা স্থগিত করা হয়েছে। এর পরিবর্তে তারা আগামী পাঁচ দিন রাজধানীর কয়েকটি স্থানে গরমে অতিষ্ঠ জনসাধারণের মধ্যে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ করবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন রওশন এরশাদের জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ কো–চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন, কো–চেয়ারম্যান সাহিদুর রহমান, মহাসচিব কাজী মামুনুর রশীদ, শফিকুল ইসলাম, গোলাম সারোয়ার ও সুনীল শুভ রায়। এ সময় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।