গভীর রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত একটার দিকে রাজধানীর গুলশানের একটি বাসা থেকে তাঁকে আটক করা হয়েছে।
বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার এক বার্তায় জানিয়েছেন, গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে তুলে নিয়ে গেছেন।
সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর খোঁজে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মধ্যরাতে গুলশানের ৮১ নম্বর সড়কের ওই বাড়িটি ঘিরে ফেলেছিলেন বলে এই বিএনপি নেতার পরিবারের এক সদস্য জানিয়েছিলেন।
পরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন–অর–রশীদও প্রথম আলোকে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন। দলটির চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বিএনপির নেতাদের বৈঠকে তাঁকে দেখা গেছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর গুলশান এলাকা থেকে বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে গ্রেপ্তারের কথা জানানো হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট একটি দায়িত্বশীল সূত্র জহির উদ্দিন স্বপনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে।
২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে দলটির নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর থেকে এই গ্রেপ্তার অভিযান চলছে। গত রোববার (২৯ অক্টোবর) বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তার করে ওই ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এরপরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সংঘর্ষের এই ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার তাঁদের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের এই গ্রেপ্তার অভিযানের মুখে বিএনপির কেন্দ্রীয় অনেক নেতা আত্মগোপনে আছেন। বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ভোররাতে গুলশান এলাকা থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হক, ঢাকা মহানগর (উত্তর) যুবদলের সদস্যসচিব সাজ্জাদুল পারভেজ ও সদস্য গোলাম কিবরিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁদেরকেও ২৮ অক্টোবরের সংঘর্ষের একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। পুলিশের আবেদনে বৃহস্পতিবার এই তিনজনেরও আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।