কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন। আপিল বিভাগের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করার কথা বলছে সরকার। একই সঙ্গে সরকার কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এ সমস্যা নিয়ে প্রথম আলো চারজন রাজনীতিকের অভিমত নিয়েছে। এখানে জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদেরের অভিমত তুলে ধরা হলো
কোটাব্যবস্থা রাখাটাই অযৌক্তিক। প্রতিবন্ধী, নারী বা সুনির্দিষ্ট কোনো এলাকাকে যদি অনগ্রসর মনে করা হয়, তাকে সমতায় আনার জন্য কিছু কোটা দেওয়া যেতে পারে। অর্থাৎ ন্যূনতম কোটা—এটাই সংবিধানের স্পিরিট।
মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংবিধান অনুমোদন করে না। মুক্তিযোদ্ধাদের পরবর্তী প্রজন্ম, যাদের কোটা দেওয়া হয়েছে, এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। এটা বংশপরম্পরায় সমাজে বৈষম্য সৃষ্টি করে এবং এই বৈষম্যের কারণে সমাজটা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গেছে।
শিক্ষার্থীরা কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। তারা তো আইনশৃঙ্খলাবিরোধী কিছু করেনি। সরকার তাদের কথা শুনে তাদের যদি আস্থায় আনতে পারত, তাহলে তারা এমনিতেই চলে যেত। এরা তো আমাদেরই ছেলেমেয়ে। আলাপ-আলোচনা করে এর গ্রহণযোগ্য সমাধান হতে পারে। গায়ের জোরে সমাধান, সেটা পাকিস্তান আমলে হয়েছে, ব্রিটিশ আমলে হয়েছে।
আমি মনে করি, কোটাবিরোধী আন্দোলনকে একটা রাজনৈতিক রং দেওয়ার চেষ্টা করছে সরকার। ছাত্ররা রাজনীতিবিদদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করছে না। এটা তাদের কৌশল। আমি ধারণা করি, দেশের ৯৯ শতাংশ জনগণের মতামত হলো, কোটাপদ্ধতি দরকার নেই। এটা বৈষম্য সৃষ্টিকারী, মেধাবিকাশের এবং ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।
অভিজ্ঞতা থেকে যা বুঝতে পারি, সরকার শক্তি প্রয়োগের জায়গায় যেতে পারে। কিন্তু সব সময় এগুলো করে সমাজে যে বিভাজনটা ওনারা সৃষ্টি করছেন এবং বিভিন্নভাবে ঘায়েল করার চেষ্টা করছেন, এর ফল দেশের জন্য ভালো হবে না, তাঁদের জন্যও ভালো না। বৈষম্য, বিভাজন জনগণ মেনে নেবে না।
জি এম কাদের, সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা