মিয়ানমার নিয়ে সৃষ্ট উদ্বেগ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জাতিসংঘকে লিখিতভাবে বাংলাদেশ জানাবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্তে বাংলাদেশের অবস্থান আরও শক্তিশালী করা হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের সীমান্তে শঙ্কা জিইয়ে রাখতে পারি না। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। চিঠি দিবে জাতিসংঘকে। মিয়ানমার সীমান্তের রেশ ভারতেও গেছে। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। এরই মধ্যে ভারতের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে মিয়ানমার সীমান্ত ইস্যুটাও আছে।’
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংরক্ষিত নারী আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তথ্য জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সীমান্ত উদারভাবে খুলে না দেওয়ার কথা জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, যাঁরা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন, তাঁরা সে দেশের সীমান্তরক্ষী ও সেনাবাহিনীর সদস্য। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল, তাঁরা তাঁদের ফিরিয়ে নেবে এবং ফিরিয়ে নিতেই হবে। ফিরিয়ে না নেওয়া নিয়ে বিকল্প নেই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের নীতি আমরা আলাপ–আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করব। গায়ে পড়ে উসকানি দেব না।’
‘বাংলাদেশ ক্রসফায়ারের মুখে পড়েছে’—বিএনপির এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপির মাথা খারাপ হয়ে গেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করার কথা বলেছেন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকও সে বার্তা দিয়েছেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টও বার্তা দিয়েছেন। বিএনপির এখন সব আশাই শেষ। তারা মনে করেছিল, বিদেশি বন্ধুরা পাশে এসে দাঁড়াবে। তাদের সে আশা একেবারে শেষ হয়ে গেছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির আন্দোলন এত ব্যর্থতার মধ্যে নিপতিত হবে, এটা তারা ভাবতে পারেনি। তারা মনে করেছে তারা কিছু দূর এগিয়ে নিলে বাকিটা বিদেশিরা সম্পন্ন করে দেবে। শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটাবে। এ ধরনের একটা পরিকল্পনা ছিল এবং তারা মনে করেছে নির্বাচনের পরে ভিসা নীতি প্রয়োগ করবে। অথবা নিষেধাজ্ঞা আসবে। কিন্তু তাদের সব আশাই শূন্য হয়ে গেছে। সব আশাই মরীচিকা হয়ে গেছে।
বিএনপির আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা না থাকার কারণে দলটির এমন অবস্থা হয়েছে বলে মনে করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, যে আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা নেই, সেই আন্দোলন সফল হয় না। দলের কর্মীদের দিয়ে তারা আন্দোলন করেছে। জনসম্পৃক্ততা থাকলে এরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারত।
এ সময় সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করার মতো পরিবেশ–পরিস্থিতি আছে বলেই সারা বিশ্ব থেকে প্রশংসা পাচ্ছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী প্রশংসিত হচ্ছেন। তাতে বিএনপির অন্তরজ্বালা বেড়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের জানান, গত তিন দিনে সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য ১ হাজার ৫৪৯টি ফরম বিক্রি করেছেন তাঁরা। এতে দলের আয় হয়েছে ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন প্রমুখ।