মানুষ ও সহায়-সম্পত্তি পুড়িয়ে ক্ষমতায় আসা যায় না: তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সচিবালয়ে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোকচিত্র প্রদর্শনী’ উদ্বোধনের পর প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। ঢাকা, ১৩ আগস্ট
ছবি: পিআইডি

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, মানুষ ও সহায়-সম্পত্তি পুড়িয়ে ক্ষমতায় আসা যায় না।

আজ দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তর আয়োজিত ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোকচিত্র প্রদর্শনী’ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জনগণের ওপর পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে, মানুষ পুড়িয়ে, মানুষের সহায়-সম্পত্তি পুড়িয়ে সর্বোপরি পবিত্র কোরআন শরিফ পুড়িয়ে তাদের পক্ষে কখনোই ক্ষমতা আসা সম্ভবপর নয়। সে কারণে বিএনপির ক্ষমতায় আসার কোনো সম্ভাবনা নাই।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে না আসলে বিএনপি ৫০ বছর পিছিয়ে যাবে। বিএনপি দলটি টেকানোই তখন তাদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গত সাড়ে ১৪ বছরে দেশ যেভাবে এগিয়েছে, সমগ্র পৃথিবী তার প্রশংসা করছে। জাতিসংঘের মহাসচিব, ভারতের প্রধানমন্ত্রী, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান অর্থনীতিবিদ, পৃথিবীর অন্য রাষ্ট্রনায়কেরা এবং বিশ্বের শীর্ষ পত্রপত্রিকাও প্রশংসা করছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল সাহেব বা তাঁদের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ সেটি দেখতে পান না। এটি তাঁদের চেতনার দৈন্য, রাজনৈতিক দৈন্য আর দেখেও না দেখার ভান করে।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে বিএনপির দাবির প্রশ্নে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবের তো পাকিস্তানপ্রীতি আছে। তিনি কিছুদিন আগে বলেছেন পাকিস্তানই ভালো ছিল। ওনারা পাকিস্তানকে অনুসরণ করেন। পৃথিবীর কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নাই, একমাত্র পাকিস্তান ছাড়া। আমার প্রশ্ন, তারা পাকিস্তানকে কেন অনুসরণ করে। যাদের এত পাকিস্তানপ্রীতি, তারা প্রয়োজনে পাকিস্তান চলে যেতে পারে। তা–ও যদি পাকিস্তান তাদের গ্রহণ করে আরকি।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আগামী নির্বাচন সামনে রেখে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ষড়যন্ত্র ২০১৪ সালেও ছিল, ২০১৮ সালেও ছিল। কোনো ষড়যন্ত্রে লাভ হবে না। দেশ অব্যাহতভাবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ।’

এর আগে বঙ্গবন্ধুর ওপর সপ্তাহব্যাপী চিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধনকালে তথ্য অধিদপ্তরে এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন তথ্যমন্ত্রী। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, ইতিহাসের পাতা থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলার অপচেষ্টা সফল হয়নি, বরং যারা মুছে ফেলতে চেয়েছিল, তারাই ইতিহাসের পাতা থেকে হারিয়ে গেছে। পৃথিবীর মুক্তিকামী মানুষের কাছে প্রেরণার উৎস স্বমহিমায় চিরভাস্বর বঙ্গবন্ধুর স্থান মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায়।

হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ স্বাধীনতার দেড় দশকের মধ্যে একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরিত হতো। বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয়, বিভিন্ন সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী সে বছর দেশে ১০ হাজার মেট্রিক টন অতিরিক্ত খাদ্য উৎপাদন হয়েছিল, জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৯.৫৪ শতাংশ।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আজ বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্র রচনার এবং বঙ্গবন্ধুকন্যার রাষ্ট্র পরিচালনার সার্থকতা সেখানেই যে আমরা পাকিস্তানকে আরও ৭-৮ বছর আগেই সব সূচকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেছি, তারা আমাদের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। দেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশে উন্নীত হয়েছে।’