রাষ্ট্র ক্ষমতায় জামায়াতে ইসলামীর হাতে এলে জনগণ ও রাষ্ট্র নিরাপদ থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। তিনি বলেছেন, ‘জামায়াতের লোকেরা দুর্নীতি করে না, চাঁদাবাজি করে না। জামায়াতের লোকেরা স্বজনপ্রীতি করে না, রাজনীতিকে ব্যবসা হিসেবে নেয় না। জনগণ যদি পরীক্ষামূলকভাবে জামায়াতের হাতে বাংলাদেশকে তুলে দেয়, তারা দেখবে কেমন বাংলাদেশ হয়, তা আমরা দেখাব।’
আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরে ‘ন্যায্যমূল্যে সবজি বিক্রয়’ কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন এ কথা বলেন।
জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে জানিয়ে সেলিম উদ্দিন বলেন, বর্তমান সরকার জিনিসপত্রের দাম দ্রুত সহনশীল পর্যায়ে নিয়ে আসবেন। তাঁরা হয়তো চেষ্টা করছেন। কিন্তু দেশে মানুষ নামের কিছু অমানুষ, যাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় আছে, তাঁদের বিভিন্ন সামাজিক পরিচয় আছে, তাঁরাই বাজার ও পরিবহন সিন্ডিকেট করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাঁরাই বাজার নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের এই সদস্য বলেন, ‘আমরা সরকারকে বলব, কারও চেহারার দিকে না তাকিয়ে বরং যাঁদের ত্যাগের বিনিময়ে ক্ষমতায় এসেছেন, তাঁদের চেহারার দিকে তাকান। দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে যাঁরা চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ তাঁদের ধরে প্রকাশ্যে বিচার করুন। তাঁদের প্রতিহত করুন। এ দেশের ১৮ কোটি মানুষ আপনাদের সমর্থন দেবে, তা না করে জাতিকে কষ্ট দিলে আপনারাও ব্যর্থ হয়ে বিদায় নেবেন।’
সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘জামায়াতের প্রত্যেকটি লোক হয় চাকরি করে, না হয় আলাদা ব্যবসা করে। সেই উপার্জিত অর্থ আমরা দলকে দিয়ে থাকি। আমরা চাঁদাবাজি করি না, টেন্ডারবাজিও করি না।’
জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, ‘আমরা ইসলামী ব্যাংকিং পদ্ধতি চালু করে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান করেছি। বাংলাদেশে যে রেমিট্যান্স (প্রবাসী আয়) আসে, তার একটা বড় অংশ আমাদের উদ্যোগের কারণে, আমাদের চেষ্টার কারণে আসে। আমরা ক্ষমতায় না গিয়েও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতালসহ বিভিন্ন অবকাঠামো তৈরি করে প্রমাণ করেছি। আমরা সেই পরীক্ষায় ইতিমধ্যে সফল হয়েছি।’
সেলিম উদ্দিন একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
জামায়াত নেতা বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে জামায়াতে ইসলামীকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য বিগত পতিত স্বৈরাচার এমন কোনো কাজ নেই, যেটা করেনি। রাষ্ট্র থেকে একটি দলকে নিশ্চিহ্ন করতে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে দেশের একটি বৃহত্তম অন্যতম রাজনৈতিক দলের জাতীয় নেতাদের যাঁরা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তাঁদের হত্যা করেছে। পতিত স্বৈরাচার যাওয়ার তিন দিন আগে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছিল। তারা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেছিল, আল্লাহ তায়ালা তাদের দেশছাড়া করেছেন।
ন্যায্যমূল্যের বাজার ঢাকার সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান সেলিম উদ্দিন। টিসিবির পাশাপাশি জনগণের জন্য আরও কম দামে পণ্য দিয়ে সেবা দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
উত্তরা মডেল থানা যুব বিভাগের সভাপতি আতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জামায়াতের উত্তরা পশ্চিম জোনের সহকারী পরিচালক মাহবুবুর রহমান, উত্তরা মডেল থানার আমির মো. ইব্রাহিম খলিল, নায়েবে আমির হারুন অর রশীদ ও স্থানীয় নেতা মাহফুজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।