শাসনব্যবস্থার বদলই এখন গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য: জোনায়েদ সাকি

গণসংহতি আন্দোলনের সংগ্রামের দুই দশক ও রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশের সাত বছর উপলক্ষে সোমবার জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিসংগ্রামের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলের নেতা–কর্মীরা
ছবি: সংগৃহীত

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই সরকার হটানোর সঙ্গে সঙ্গে বর্তমান শাসনব্যবস্থার বদল ঘটানোই এখন জনগণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য। গণসংহতি আন্দোলন প্রতিষ্ঠার দুই দশক এবং রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশের সাত বছর পূর্তি উপলক্ষে দুই মাসব্যাপী কর্মসূচি পালন করছে দলটি। কর্মসূচির প্রথম দিন সোমবার এসব কথা বলেন জোনায়েদ সাকি।

এদিন জাতীয় স্মৃতিসৌধে একাত্তরের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন গণসংহতি আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা। এ সময় জোনায়েদ সাকি ছাড়াও গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনির উদ্দিন পাপ্পু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জুলহাসনাইন বাবু, দীপক রায়, কার্যনির্বাহী সদস্য মিজানুর রহমান মোল্লাসহ বিভিন্ন থানা কমিটির নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ২০০২ সালে গণসংহতি আন্দোলন যাত্রা শুরু করে। এই সময়ে গণমানুষের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দাবিকে এগিয়ে নিতে সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে সচেষ্ট থেকেছেন তাঁরা। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে গণমানুষের পক্ষে এ দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছে গণসংহতি আন্দোলন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সাম্য-মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে যে বাংলাদেশ গঠিত হয়েছে, আজ ৫২ বছর পরেও তার উল্টো পথেই হাঁটছে দেশ।

আমরা দেখছি মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি নির্বাচিত সরকারের হাতেও মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে জবরদস্তির মাধ্যমে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার প্রবণতা বর্তমানে দেখা যাচ্ছে।’

জোনায়েদ সাকি এ সময় আরও বলেন, সাংবিধানিকভাবেই নির্বাচিত সরকারের হাতেও এমনভাবে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হয় যে সরকারগুলো জবাবদিহিহীন হয়ে পড়ে এবং মানুষের অধিকার কেড়ে নিতে পারে। তারা স্বৈরাচারী হয়ে সর্বব্যাপী শাসন কায়েম করেছে। সাংবিধানিকভাবে স্বৈরাচারী-ফ্যাসিবাদী কাঠামোই জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এ ফ্যাসিবাদ হটানোর সঙ্গে সঙ্গে এ শাসনব্যবস্থার বদল ঘটানোই জনগণের জন্য এখন গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য।

গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, ‘আমরা যখন ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়ছি, সেটা আসলে এ শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের সংগ্রাম। এবারের লড়াই ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই। এবারের লড়াই এমনভাবে গড়ে উঠবে, যা স্বৈরাচারের পতনের সঙ্গে সঙ্গে দেশে একটা সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে তুলবে। জবাবদিহি ও জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করা যাবে।’

নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, ‘জনগণের অধিকার হরণ করে শাসন কায়েম করা কর্তৃত্ববাদী সরকারকে বিদায় নিতে হবে। এ জন্য জনগণের বৃহত্তর ঐক্য গঠনের প্রক্রিয়ায় আমরা গণতন্ত্র মঞ্চ করেছি। বিভিন্ন দলের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা জনগণের বৃহত্তর ঐক্য তৈরি করতে চাই।’

আবুল হাসান বলেন, এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে অবশ্যই বিদায় নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। আগামী নির্বাচন হবে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নির্মাণের নির্বাচন।