মিত্রদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে নতুন কর্মসূচি দেবে বিএনপি

বিএনপি
বিএনপি

নির্বাচন–পরবর্তী পরিস্থিতিতে দল ও মিত্র জোটের শরিকদের ঐক্যবদ্ধ রেখে আবার আন্দোলন-কর্মসূচির পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, এ লক্ষ্যে সরকারবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির নীতিনির্ধারণী নেতারা মতবিনিময় শুরু করেছেন। আলোচনার পর নতুন কর্মসূচি দেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, পরবর্তী আন্দোলনের লক্ষ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ‘১২–দলীয় জোট’ ও ‘জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট’ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তারেক রহমান যুক্তরাজ্য থেকে স্কাইপে মতবিনিময়ে অংশ নেন। এ ছাড়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান ও ভারতে অবস্থানরত সালাউদ্দিন আহমেদও স্কাইপে যুক্ত হন। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য দল ও জোটের নেতাদের সঙ্গেও মতবিনিময় হবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান।

মতবিনিময়ে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব ও ১২–দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, এত চাপ, এত প্রলোভন সত্ত্বেও জোটের নেতারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন থেকে সরে যাননি। সে জন্য জোট নেতাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। জনগণের বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

১২–দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে মতবিনিময়ে আরও অংশ নেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, জাগপার রাশেদ প্রধান ও ইকবাল হোসেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম ও রশিদ বিন ওয়াক্কাস, বাংলাদেশ জাতীয় দলের শামসুল আহাদ, ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল করিম প্রমুখ।

এদিকে গতকাল বিকেলে এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ‘ডামি নির্বাচন বাতিল করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার’ আহ্বান জানান বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি দাবি করেন, ভোট বর্জন করে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে ‘লাল কার্ড’ দেখিয়েছে। এই ডামি নির্বাচনের ডামি প্রার্থীরা এখন ডামি সংসদে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যাঁদের কোনো বৈধতা নেই।

নির্বাচন কমিশন ভোট পড়ার গোঁজামিলের হিসাব তৈরি করেছে বলে দাবি করেন রিজভী। তিনি বলেন, ভোটের দিন বেলা ৩টা পর্যন্ত ২৭ দশমিক ১৫ শতাংশ ভোট পড়ার ঘোষণা দিয়ে এক ঘণ্টা পরেই চাপে পড়ে সেটি ৪০ শতাংশ করা হয়। পরবর্তী সময়ে আবার সেটি ৪১ দশমিক ৯৯ শতাংশ করা হয়েছে।

রিজভী এ প্রসঙ্গে একটি পত্রিকার প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বক্তব্য উদ্ধৃত করে পত্রিকাটি জানিয়েছে, বেলা ৩টা পর্যন্ত ভোট পড়েছিল ২৭ দশমিক ১৫ শতাংশ। বিকেল ৪টায় ভোট গ্রহণ শেষে মোট ভোট ৪ কোটি ৯৯ লাখ ৬৫ হাজার ৪৬৭টি পড়েছে বলে জানানো হয়, অর্থাৎ হার ৪১ দশমিক ৯৯ শতাংশ। শেষ এক ঘণ্টায় ১৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ ভোট পড়েছে, সংখ্যায় যা ১ কোটি ৭৬ লাখ ৫৯ হাজার ৮৮৮টি। তার মানে, সরকারের নির্দেশে শেষ এক ঘণ্টায় প্রতিটি কেন্দ্রে ভোট ডাকাতির প্রতিযোগিতা হয়েছে হার বাড়ানোর জন্য।