সব মিলিয়ে গত প্রায় পাঁচ মাসে ৯৫ মামলায় ১ হাজার ৪৯৬ জনের সাজা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে যেসব মামলায় সাজা হয়েছে, সেসব ‘রাজনৈতিক মামলা’ বলে দাবি করেছে বিএনপি। দলটির আইনজীবী নেতারা বিভিন্ন সময়ে বলেছেন, মাঠের রাজনীতিতে যাঁরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা রাখতে পারেন, তেমন নেতা-কর্মীদের সাজা হচ্ছে। বিএনপির নেতা-কর্মীদের রাজনীতি থেকে বিতাড়ন করাই সরকারের উদ্দেশ্য।
তবে বিএনপির আইনজীবী নেতাদের এমন দাবি নাকচ করে আসছে রাষ্ট্রপক্ষ। আর চলতি ডিসেম্বর মাসের ৮ তারিখে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক প্রথম আলোকে বলেছেন, মামলাজট কমাতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে পুরোনো মামলা নিষ্পত্তি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখানে বিএনপি কোনো লক্ষ্যবস্তু নয়।
বিএনপির নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সূত্রাপুর থানায় একটি মামলা হয়েছিল। মামলার এজাহারের তথ্য অনুযায়ী, সেদিন বেলা ১১টার দিকে রায়সাহেব বাজার মোড়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সরকারবিরোধী মিছিল বের করেন। এতে বাধা দিলে পুলিশকে লক্ষ্য করে নেতা–কর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন এবং ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। এ মামলায় ২০১৯ সালের ৮ জুলাই ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয় গত ২৭ নভেম্বর।
সাক্ষী হিসেবে এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে পাঁচজন পুলিশ সদস্যকে আদালতে হাজির করা হয়। এ মামলায় ১০ জনকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকার সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. আতাউল্লাহ এ রায় দেন।
সূত্রাপুর থানার আরেকটি মামলা হয় ২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর। মামলার এজাহারের তথ্য বলছে, সেদিন বিকেলে ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে বিএনপির নেতা–কর্মীরা সরকারবিরোধী মিছিল বের করেন। মিছিলে বাধা দিলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এ মামলায় ২০১৯ সালের ৩০ জুন আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।
গত বছরের ২ মার্চ এ মামলায় অভিযোগ গঠন করেন আদালত। সাক্ষী হিসেবে এ মামলায় চারজন পুলিশ সদস্যকে আদালতে হাজির করা হয়। সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয় গত ১৪ মে, শেষ হয় ১৮ ডিসেম্বর। রায়ে ৯ আসামিকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মামলার এজাহারের তথ্য অনুযায়ী, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দলটির নেতা-কর্মীরা ২০১৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পান্থপথ এলাকায় মিছিল বের করেন। অনুমতি ছাড়া বের করা এই মিছিলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন মিছিলকারীরা।
এ ঘটনায় করা মামলায় ২০১৮ সালের ২১ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। আসামিদের বিরুদ্ধে গত ২৭ নভেম্বর অভিযোগ গঠন করেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে পাঁচজন পুলিশ সদস্যকে আদালতে হাজির করা হয়। এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয় ৪ ডিসেম্বর। গতকালের রায়ে ১৭ জনকে আড়াই বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকার সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. মইনুল ইসলাম এ রায় দেন।