গাজীপুরের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আজ সোমবার আওয়ামী লীগের দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ সংগঠনের গঠনতন্ত্রের বিধি মোতাবেক গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে। এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর আগে গতকাল রোববার আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর এক বৈঠকে জাহাঙ্গীর আলমকে ‘চিরদিনের’ জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে জাহাঙ্গীর আলম নিজে এবং তাঁর মা জায়েদা খাতুন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যদিও জাহাঙ্গীর আলমের প্রার্থিতা বাতিল হয়। কিন্তু তাঁর মা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আছেন। তাঁর পক্ষে জাহাঙ্গীর আলম ভোটও চাইছেন।
আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সূত্র জানায়, গতকালের বৈঠকে নেতারা বলেন, জাহাঙ্গীর আলম এর আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। এরপর দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরে ক্ষমা চাওয়ায় তাঁর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু এখন তিনি আবার দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন। শুধু তিনি নন, তাঁর মাকেও প্রার্থী করেছেন। নিজের মনোনয়ন বাতিল হওয়ার পর মায়ের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন তিনি। সেখানে দলের বিপক্ষেও কথা বলছেন। এর আগে ২০১৩ সালে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে জাহাঙ্গীর স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগ করার অধিকার হারিয়েছেন।
একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা জাহাঙ্গীরের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে একমত হন। পরে সিদ্ধান্ত হয়, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের সিদ্ধান্ত লিখিত আকারে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনাকে জানাবেন। জাহাঙ্গীর আলম যাতে দলের কোনো কর্মকাণ্ডে যুক্ত না হতে পারেন, সে সিদ্ধান্তই হয়।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানিয়েছে, আজ গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে গিয়ে ওবায়দুল কাদের সম্পাদকমণ্ডলীর সুপারিশের কথা দলীয় প্রধানকে জানান। এরপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জাহাঙ্গীরকে স্থায়ী বহিষ্কারের নির্দেশ দেন।
২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোট গ্রহণ হবে। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী দলটির গাজীপুর মহানগর শাখার সভাপতি আজমত উল্লা খান।
দল থেকে বহিষ্কারের আগে সম্পাদকমণ্ডলীর সভার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানতে চাইলে আজ সকালে জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘আমি বিভিন্ন গণমাধ্যমের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। তা ছাড়া অন্য কোনো মাধ্যমে বিষয়টি আমি জানি না বা কেউ জানায়নি।’ কোনো অবস্থাতেই তিনি নির্বাচন থেকে সরে যাবেন না জানিয়ে বলেছিলেন, ‘আমার মা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছে, তাই আমাকে তার পাশে থাকতেই হবে। আমি এবং আমার মা নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থাকব।’