গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে
গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে

তারা যেভাবে কোটার জন্য লড়াই করছে, ভোটের জন্যও করতে হবে: আমীর খসরু

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘সরকার বাংলাদেশকে মেধাবী রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায় না। মেধাবীরা ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষে সুখকর না–ও হতে পারে। তারা যেভাবে কোটার জন্য লড়াই করছে, তাদের ভোটের জন্যও লড়াই করতে হবে। গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করতে হবে।’

আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। যুগপৎ আন্দোলনের ৩১ দফা ও ১ দফা ঘোষণার বর্ষপূর্তিতে এই সভার আয়োজন করে গণতন্ত্র মঞ্চ।

সভায় আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, দেশের মানুষের মালিকানা হাইজ্যাক (ছিনতাই) হয়ে গেছে। মালিকানা ফিরিয়ে আনতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য ও রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দরকার আছে। সংবিধান, বিচার বিভাগ, সংসদ, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে কী কী বদল আনতে হবে সেটি গুরুত্বপূর্ণ। সে জন্যই এই ৩১ দফা প্রণয়ন।

বিএনপিসহ সমমনা দলের মধ্যে যে ঐক্য, তা নিয়ে কারও মধ্যে সন্দেহ নেই উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘এই ঐক্যের পেছনে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। ৩১ দফাকে মানুষের কাছে নিয়ে যেতে পারিনি। এই ফ্যাসিস্ট সরকার চলে যাওয়ার পর তাদের জীবনে পরিবর্তন আসবে, সেই নিশ্চয়তা মানুষকে দিতে হবে। ৩১ দফার মধ্যে তা দেওয়া হয়েছে।’

সভাপতির বক্তব্যে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আগামীর গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রূপরেখা ৩১ দফা। সমাজের নানা অংশ জেগে উঠছে। এ লড়াইগুলো জোরদার হচ্ছে। সরকার ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ছাত্রসমাজকে আদালতের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। মানুষ আশা করে, বিরোধী দলগুলো বড় আকারের সংগ্রাম গড়ে এই সরকারকে বিদায় দেবে।’

বক্তারা বলেন, এক দফার আন্দোলন চলমান আছে। ৭ জানুয়ারির পর আন্দোলন নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। সাধারণ মানুষ বিরোধী দলগুলোর কাছ থেকে সরকারের বিরুদ্ধে যে ধরনের কর্মসূচি দেখতে চায়, শিগগিরই সে ধরনের কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন তাঁরা।

সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম, জেএসডির সহসভাপতি তানিয়া রব, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হাসনাত কাইয়ুম, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

গত বছরের এই দিনে বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনের শরিকেরা এক দফা ঘোষণা করেন। এই এক দফা হচ্ছে অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, সংসদের বিলুপ্তি, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে তার অধীনে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি, মিথ্যা গায়েবি মামলা প্রত্যাহার, ফরমায়েশি সাজা বাতিল, রাষ্ট্রব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কারের মাধ্যমে জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি, ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি।