জনগণকে নিরাপদে ও নিশ্চিন্তে সারিতে দাঁড়িয়ে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, মানুষ যাকে ইচ্ছা (ভোট) দেবে, যাকে ইচ্ছা করবে না দেবে না; কিন্তু ভোট হতে হবে। এর সঙ্গে কোনো আপস নেই।
জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কর্মসূচি উদ্বোধন ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এ কথা বলেন। তিনি লন্ডন থেকে অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন। রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আজ শনিবার বিকেলে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
দেশ, দেশের মানুষ এবং জাতীয়তাবাদী শক্তি—এই তিন শক্তির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র থেমে নেই বলেও মন্তব্য করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, এই ষড়যন্ত্র যদি রুখতে হয় অবশ্যই ভোটের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
আগামীকাল ১০ নভেম্বর থেকে তিন মাস সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষক সমাবেশ করার কর্মসূচি নিয়েছে বিএনপির অঙ্গসংগঠন কৃষক দল। তারেক রহমান এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
সংগঠনের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই কৃষক সমাবেশে আপনারা বহু শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। প্রত্যেককে একটি বার্তা দিতে হবে যে, ভাই, তুমি যে-ই রাজনীতিতে বিশ্বাস করো না কেন...একটি জায়গায় এসে দাঁড়াও। অর্থাৎ তোমার যাকে ইচ্ছা ভোট দাও। কিন্তু ভোট যাতে হয় এই ব্যবস্থাটা করতে হবে যেকোনো মূল্যে।...ভোট হতে হবে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘ভোট হতে হবে। ওই ডামি নির্বাচন হতে পারবে না, নিশিরাতের ভোট হতে পারবে না, দিনের আলোতে ভোট হতে হবে। যাকে খুশি তাকে ভোট দেওয়ার স্বাধীনতা থাকতে হবে, নিরাপদে ভোট দেওয়ার স্বাধীনতা থাকতে হবে। ...লাইনে দাঁড়াবে, ভোট দিয়ে চলে আসবে। তার মত সে প্রকাশ করবে। কোনো ভয়ভীতি থাকবে না। এইটার সঙ্গে কোনো কম্প্রোমাইজ নয়।’ তিনি বলেন, ‘এটা যদি নিশ্চিত করা যায়, ইনশা আল্লাহ ধীরে ধীরে দেশের সব সমস্যা কমিয়ে আনতে সক্ষম হব। ষড়যন্ত্র যদি রুখতে হয়, অবশ্যই ভোটার স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।’
নানা ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ষড়যন্ত্র যে থেমে নেই। আপনারা প্রতিনিয়ত পত্রপত্রিকার খবরে এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে, (শেখ হাসিনার প্রতি ইঙ্গিত করে) বিভিন্ন টেলিফোন আলাপের মাধ্যমে জানতে পারছেন। জাতীয়তাবাদী শক্তির উপস্থিত নেতৃবৃন্দকে বলব, ষড়যন্ত্র যে থেমে নেই এই কথাটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম না হব, ততক্ষণ পর্যন্ত আজকের এই বাজারমূল্য, এই সিন্ডিকেটকে ভাঙা সম্ভব হবে না।’
৩৫ মিনিটের দীর্ঘ বক্তব্যে তারেক রহমান আধা ঘণ্টাই বাংলাদেশের কৃষি, কৃষক, কৃষি সরঞ্জাম, কৃষির উৎপাদন, কৃষিভিত্তিক কলকারখানা গড়াসহ এ–সংক্রান্ত বিএনপির চিন্তা-পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন। তিনি সরাসরি কৃষকদের নিয়ে মাঠপর্যায়ে কৃষক দল গঠন করার নির্দেশনা দেন।
কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফিরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন।