ভিসা নীতি আরোপ করে কি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব

নাইজেরিয়ায় নির্বাচনের ছয় মাস আগে ভিসা নীতি ঘোষণা করেও নির্বাচনে কারচুপি ঠেকানো যায়নি। কারচুপির সঙ্গে যাদের রুটি-রুজির সম্পর্ক রয়েছে, তারা সহজে শোধরাবে না। আবার ভিসা নিষেধাজ্ঞায় যারা পড়েছে, তাদের নাম প্রকাশ না করায় তারাও নির্ভার থাকে। সুতরাং এসব ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা উচিত বলে অনেকে মনে করেন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গত মে মাসে বাংলাদেশের জন্য ভিসা নীতি ঘোষণা করেন

বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারী ব্যক্তিদের ব্যাপারে মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণার পর দুই ধরনের প্রতিক্রিয়া হয়েছে। একদিকে দেশের কোনো কোনো মহলে রাতের ঘুম হারাম হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা না পাওয়া মানে তাঁদের বড় দুই ছেলে ও বউমাদের সঙ্গে গরমের ছুটিতে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল। বেনামে যে দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে, সেগুলোর ভাড়াও হাতছাড়া হতে পারে। সে কারণেই ঘুম হারাম। 

অন্যদিকে আরেক মহল ভাবছে, নির্বাচনী বৈতরণি পার হওয়ার জাদুকরি তাবিজ তাঁরা পেয়ে গেছেন। এমন লোকের অভাব নেই যাঁরা ভাবছেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে এভাবে ‘স্ক্রু টাইট’ দেওয়ায় কাজ হতে পারে।  

সরকারি মহলের কর্তাব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শোরগোল শোনা যাচ্ছে। কেউ কেউ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই হস্তক্ষেপে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। কেউবা বলছেন, যাব না তোমার যুক্তরাষ্ট্রে। যেতে হলে যাওয়ার মতো দেশের কি অভাব রয়েছে! সাবেক এক উপাচার্য দেখলাম আগ বাড়িয়ে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে যাইনি, যাবও না।’ এটা তাঁর রাগ না অনুরাগ, তা অবশ্য ঠিক বোঝা গেল না।

অভিজ্ঞতা বলে, মার্কিন ভিসা নিয়ন্ত্রণ কোনো সর্বরোগ হরণকারী বটিকা নয়। এই বটিকা গেলালাম আর আগামী নির্বাচন সহিসালামতে নির্বিঘ্নে শেষ হলো, ব্যাপারটা মোটেই তেমন নয়। নাইজেরিয়ার উদাহরণ থেকে ব্যাপারটা বোঝা যাক।

ভিসা নিষেধাজ্ঞা কোথায়, কারা

বাংলাদেশই একমাত্র দেশ নয়, যার বিরুদ্ধে ভিসা নীতির ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নির্বাচনী গোলযোগও ভিসা না পাওয়ার একমাত্র কারণ নয়। সাম্প্রতিক সময়ে যাঁরা এই ভিসা নীতির আওতায় এসেছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন নাইজেরিয়া, কঙ্গো, ও সুদানের নাগরিক। নাইজেরিয়ায় চলতি বছর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের আগে ও পরে গোলযোগ ও কারচুপির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ভিসা না দেওয়ার কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু কঙ্গোর বেলায় এমন সব ব্যক্তিকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে, যাঁরা চীনে বিরল প্রজাতির বন্য প্রাণী পাচারের সঙ্গে জড়িত। অন্যদিকে সুদানের ক্ষেত্রে যাঁরা দেশটির গণতান্ত্রিক প্রত্যাবর্তনে বাধা দিচ্ছেন, তাঁদের ভিসা না দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

বাংলাদেশের ব্যাপারটা কিছুটা ভিন্ন। যেসব দেশের কথা বললাম, তাদের ক্ষেত্রে কারা ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বেন, তা খুব স্পষ্ট করে বলা হয়নি। আবার বাংলাদেশের বেলায় একদম নাম ধরে ধরে জানানো হয়েছে, কারা ভিসা নীতির আওতায় পড়বেন। সরকারি ও বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মী তো রয়েছেনই। তাঁদের সঙ্গে আরও রয়েছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন, বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা, এমনকি সাংবাদিকেরাও।

নরম-গরম প্রতিবাদ

ভিসা নীতি আরোপ করা হয়েছে, এমন সব দেশে মার্কিন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে কমবেশি প্রতিবাদ হয়েছে, নরম-গরম সমালোচনা শোনা গেছে। তবে বাংলাদেশের মতো এই এক বিষয় নিয়ে অহোরাত্র বাচালতা সেখানে নজরে পড়েনি। আমার চোখে যা পড়েছে, তার মধ্যে এক ব্যতিক্রম হলো নাইজেরিয়া। কারণটা বোঝা দুষ্কর নয়। এই দেশটির সঙ্গে আমাদের অবস্থার কিছুটা মিল রয়েছে। নির্বাচনী অনিয়ম আমাদের দুই দেশেই চেনা ও পুরোনো অভিজ্ঞতা। নির্বাচন ব্যবস্থাপকদের নিরপেক্ষতা উভয় দেশেই প্রশ্নবিদ্ধ। দলবাজ নেতা-কর্মীদের পেশি প্রদর্শন দুই দেশেই অতি সাধারণ ব্যাপার।

■ ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র প্রথম ভিসা কড়াকড়ি আরোপ করার পর কিছুটা ফল পাওয়া গিয়েছিল।

■ নাইজেরিয়ায় নির্বাচনের ছয় মাস আগে ভিসা নীতি আরোপ করেও লাভ হয়নি।

■ ভিসা প্রত্যাখ্যাত ব্যক্তিদের নাম গোপন থাকায় কাজ না হওয়ার অন্যতম কারণ।

■ ভিসা নীতি নিয়ে বাংলাদেশের মতো শোরগোল কোথাও নেই।

■ গণতন্ত্রের দেখভাল করতে হবে দেশের সরকার, জনগণ ও সুশীল সমাজের।

নাইজেরিয়ায় ট্রাইবাল আনুগত্যের একটা ব্যাপার রয়েছে। তবে আমাদের দেশে নিজ নিজ দলের প্রতি আনুগত্য চরিত্রগতভাবে খুব একটা ভিন্ন নয়। প্রতিপক্ষকে ‘চুবানি’ দিতে উভয়েই সমান প্রস্তুত। আরও একটা জায়গায় এই দেশের অভিজাত সম্প্রদায়ের অর্থাৎ ক্ষমতাভোগীদের মধ্যে মিল রয়েছে। তাঁদের অনেকেই আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। অনেকেই ভবিষ্যৎ বিপদের কথা মাথায় রেখে টাকা দেশে না রেখে বিদেশে, বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রে রাখেন। তাঁদের অনেকেরই ছেলেমেয়ে, আত্মীয়স্বজন যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে আসন গেড়ে বসেছেন। সেই যুক্তরাষ্ট্রে যদি না যাওয়া যায়, তাহলে এত টাকাপয়সা বানিয়ে লাভ কী?

নাইজেরিয়া ও বাংলাদেশ

অনুমান করি, সৎ উদ্দেশ্যেই এসব দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্র তাদের এই নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। এসব দেশকে যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্র মনে করে। সে চায় সেখানে গণতন্ত্র আসন গাড়ুক, মানবাধিকার রক্ষিত হোক, দেশ দুর্নীতিমুক্ত হোক। আমাদের বেলায় তো যুক্তরাষ্ট্র সরাসরিই বলেছে, নির্বাচনে কে জিতল কে হারল—তা নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। তারা শুধু চায় আগামী নির্বাচন যেন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হয়, প্রত্যেক নাগরিক যেন কোনো ভয়ভীতি ছাড়া ভোট দিতে পারেন এবং কোনো কারচুপি ছাড়া নির্বাচনী ফলাফল ঘোষিত হয়।

এখন প্রশ্ন হলো—যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নীতি ঘোষণার পর বাস্তবায়ন শুরু করে দিল আর তাতেই বাংলাদেশে একদম সাফসুতরো সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, এমন কোনো নিশ্চয়তা কি আছে? নাইজেরিয়ার উদাহরণ থেকে আমরা জানি, কারচুপির সঙ্গে যাদের রুটি-রুজির সম্পর্ক রয়েছে, তারা সহজে শোধরাবে না। গোলযোগ ও কারচুপি হবে, এমন সন্দেহ থেকেই যুক্তরাষ্ট্র গত বছরের নভেম্বরে নাইজেরিয়ার নির্বাচনে গোলযোগকারীদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞার কথা ঘোষণা করে। অর্থাৎ নির্বাচনের প্রায় ছয় মাস আগে। ২২ নভেম্বর নাইজেরিয়ার রাজধানী আবুজায় মার্কিন দূতাবাস থেকে স্পষ্ট বলা হয়, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বাধা দেবে, এমন ব্যক্তিবিশেষের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করবে। এ কাজ আমরা আগেও করেছি, আবারও করতে পারি, তাঁরা জানালেন।

সেই কাগুজে ঘোষণায় অবস্থার বিন্দুমাত্র হেরফের হয়েছে—এ কথা ভাবার কোনো কারণ নেই। এ বছর ফেব্রুয়ারি ও মার্চে দুই দফায় নাইজেরিয়ায় যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেছে, তাতে এত ব্যাপক অনিয়ম, কারচুপি ও রক্তারক্তির কাণ্ড ঘটেছে যে দেশের ভেতরে-বাইরে সব নিরপেক্ষ মহলই সে নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করেছেন। জনপ্রিয় দৈনিক ভ্যানগার্ড–এর কথায়, এই নির্বাচন ছিল নাইজেরিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্য। নয়া প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে প্রত্যাশা করা হয়েছিল, কারচুপির সমস্যা মিটবে। সময়মতো নির্বাচনী ফলাফল পাওয়া যাবে, এমন আশাও ছিল। কোনোটাই সত্য প্রমাণিত হয়নি।

সরি, যুক্তরাষ্ট্র

শুধু ভিসার ধমক দিয়ে যে কোনো কাজ হবে না, এ কথা নাইজেরিয়ায় অনেকেই আগাম বলে দিয়েছিলেন। তাঁদের একজন হলেন আফ্রিকা রিপোর্ট পত্রিকার প্রধান রাজনৈতিক ভাষ্যকার এনিওলা আকিনকুতু। ‘দুঃখিত যুক্তরাষ্ট্র, তোমার ভিসার হুমকিতে কোনো কাজ হবে না’—এই শিরোনামে এক নিবন্ধে তিনি মন্তব্য করেন, ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র প্রথম ভিসা কড়াকড়ি আরোপ করার পর কিছুটা ফল দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এখন আর এসব নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। নির্বাচনী প্রচারণার সময় অনেক প্রার্থীই খোলামেলা বন্দুক ব্যবহারের হুমকি দিয়েছেন। 

নাইজেরিয়ার একটি অঙ্গরাজ্যের গভর্নর প্রকাশ্যে বলেছেন, ‘আমাদের দেশ আমরা যেমন খুশি চালাব, যুক্তরাষ্ট্রের সে ব্যাপারে নাক গলানোর অধিকার নেই।’ তর্জনী উঁচিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘বিদেশ থেকে যদি কেউ আসার চেষ্টা করে, তাহলে এখনই বলে দিচ্ছি, তাদের লাশ হয়ে ফিরতে হবে।’

আকিনকুতু বলেছেন, ভিসা নিষেধাজ্ঞায় কাজ না হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে, ভিসার আবেদন করে কে ব্যর্থ হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র কখনো তাদের তালিকা প্রকাশ করে না। ফলে এসব ব্যক্তির কারও বিব্রত বা ভীত হওয়ার কোনো কারণই থাকে না। তিনি প্রস্তাব করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি সত্যি সত্যি তাদের ঘোষিত নীতি থেকে কোনো সুফল পেতে চায়, তাহলে ভিসা চেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন, এমন প্রত্যেক ব্যক্তির নামধাম প্রকাশ করা হোক। রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট পুতিনের যেসব মিত্রের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তাঁদের সবার নাম-পরিচয় সবিস্তার প্রকাশ করা হয়েছে। নাইজেরিয়ার ব্যাপারেও তাই করা উচিত।

ভিসা না পাওয়ার তালিকা

আকিনকুতুর কথাটা একদম ফেলনা নয়। যুক্তরাষ্ট্রে যারা টাকা পাঠাতে পারে, তারা সে টাকা ফেরত আনার পথও জানে। ফলে পাচার করা বিত্ত নিয়ে আপাতত মাথা না ঘামালেও চলবে। কিন্তু ভিসা চেয়ে ভিসা পায়নি, সে খবর জানাজানি হলে আর কিছু না হোক, সমাজে সম্মানহানি হবে। অনলাইন পত্রিকান্তরে জানা গেছে, বাংলাদেশে ভিসা নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন, এমন মানুষের সংখ্যা ৪১৭। অন্তত একজন জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা রয়েছেন এই তালিকায়। সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের কোনো উপায় নেই। মার্কিন কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে কারা কারা নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে, তার একটি তালিকা বাংলাদেশ সরকারের হাতে ধরিয়ে দিয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। অনুমান করি, সরকার এই তালিকা প্রকাশ করবে না। সরকার-ঘনিষ্ঠ অনেকেই হয়তো এই তালিকায় আছেন, তাঁদের বিব্রত করা সমীচীন হবে না। এটাই বড় কারণ।

কিন্তু এই তালিকা ‘অদৃশ্য’ হয়ে থাকায় যে উদ্দেশ্যে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো, তা পুরোপুরি ব্যর্থ হতে পারে। নাইজেরিয়ার অভিজ্ঞতা তো সে কথাই বলে। আমি যশোরের সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারের মতো লোকের কথা ভাবছি না। এই ভদ্রলোক হুমকি দিয়েছেন, তাঁর জেলার কেউ বিরোধী দলের মিছিলে যোগ দিতে ঢাকায় গেলে, তাঁকে আর যশোরে ফিরতে দেওয়া হবে না। পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, দখলদার, চাঁদাবাজ হিসেবে অভিজ্ঞতার কথা তাঁর জীবনবৃত্তান্তে অনেক আগে থেকেই লেখা আছে। ফলে ভিসা না পেলে তাঁর লজ্জিত হওয়ার কিছু থাকবে না। কিন্তু ভাবুন তো, যে জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টার কথা শোনা যাচ্ছে, তাঁর নামটা যদি প্রকাশিত হয়, তাহলে তিনি মুখ দেখাবেন কী করে?

অতএব, যুক্তরাষ্ট্র যদি নির্বাচনী শুদ্ধতার জন্য এই নতুন ভিসা নীতি চালু করে থাকে, তাহলে নিদেনপক্ষে যা করা দরকার, তা হলো যে তালিকাটি তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে তুলে দিয়েছে, সেটা নিজে থেকেই প্রকাশ করে দেওয়া। ‘রাইট টু ইনফরমেশন’ বলে একটা জিনিস যুক্তরাষ্ট্রে চালু আছে। জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি নয়, এমন যেকোনো সরকারি নথিপত্র উন্মুক্ত করার দাবি যে কেউ জানাতে পারেন। হতে পারে ইতিমধ্যে চালাক-চতুর কোনো সাংবাদিক সেই আবেদন করে বসেছেন।

কিন্তু ভিসা নীতির প্রয়োগ অথবা ভিসা প্রত্যাখ্যাত ব্যক্তিদের তালিকার প্রকাশ—এর কোনোটিই নির্বাচনী স্বচ্ছতার গ্যারান্টি নয়। নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুদ্ধ বন্ধ করা যায় না, সন্ত্রাস ঠেকানো যায় না, গুম–খুন নির্মূল করা যায় না। নির্বাচনী কারচুপিও থামানো সম্ভব নয়। যে দেশে নির্বাচন, সে দেশের মানুষকেই তেমন নিশ্চয়তা অর্জনে হাত লাগাতে হবে। দেশটা আমাদের, তার গণতন্ত্রের দেখভাল করার ভার দেশের সরকারের, জনগণের, তথ্যব্যবস্থার ও সুশীল সমাজের। সেই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে তার দায়ভার আমাদেরই বহন করতে হবে।