সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন দীর্ঘায়িত করার কোনো কারণ নেই বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এই মুহূর্তে অপেক্ষা করছে দ্রুততম সময়ে নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকার ও সংসদ গঠন করার জন্য। যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, জবাবদিহি থাকবে। বাংলাদেশে সার্বিক সমস্যার সমাধানকল্পে দেশি-বিদেশি যে বিষয়গুলো আছে, সবগুলোর জন্য একটি নির্বাচিত সরকার এই মুহূর্তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আজ সোমবার রাতে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গণ অধিকার পরিষদের (মশিউজ্জামান-ফারুক) সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে আমীর খসরু মাহমুদ এ কথা বলেন।
মিয়া মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে গণ অধিকার পরিষদের ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল মতবিনিময়ে অংশ নেয়। এর আগে বিকেলে ববি হাজ্জাজের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (এনডিএম) নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় হয়।
গণ অধিকার পরিষদের (মশিউজ্জামান-ফারুক) সঙ্গে সভা শেষে আমীর খসরু বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার যত তাড়াতাড়ি শান্তিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক সরকারের দিকে নিয়ে যাওয়া যায়, তার জন্য আমরা সহযোগিতা করব সরকারকে।’
এর আগে এনডিএমের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংস্কারের কথা বলে নির্বাচনকে দীর্ঘায়িত করার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। কারণ, সংস্কারে আমরা জাতির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, সেটা আমরা করব। এ জন্য আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। জাতীয় সরকারের মাধ্যমে সেটা আমরা বাস্তবায়ন করব। এ ব্যাপারে কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্বের কারণ নেই। এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আগামী নির্বাচন, যেটার জন্য দেশের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।’
আমীর খসরু বলেন, ‘নির্বাচনমুখী সংস্কার এখন সবচেয়ে জরুরি। সেটি সম্পন্ন হয়ে এখন আমাদের নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। আর সংস্কার মূলত হতে হবে জনগণের আস্থা, সমর্থন ও ম্যান্ডেট নিয়ে নির্বাচিত সংসদে। নির্বাচনের আগে এখন উনারা কী সংস্কার করতে পারবেন, সেটা দেখার বিষয়। যেসব বিষয়ে ইতিমধ্যে ঐকমত্য হয়েছে, সেসব বিষয়ে সংস্কার হতে পারে। আর যেগুলোতে ঐকমত্য হবে না, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সেটি করতে হবে। এবং এটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ততই দেশের জন্য মঙ্গল।’
নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি কর্মসূচি দেবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উদার গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যেতে চাই। অনেক সংঘর্ষ হয়েছে, দেশের মানুষ অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই সাংঘর্ষিক রাজনীতি যেন বাংলাদেশে আর কোনো দিন ফিরে না আসে, আমরা সেই চেষ্টাটা করে যাচ্ছি। সেটি সফল হবে একমাত্র দ্রুত একটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার ও সংসদ গঠন করবে। যে সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে।’
নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংগঠকদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের তৎপরতার প্রেক্ষাপটে গত শনিবার থেকে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সহযোগী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করেছে বিএনপি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এর মধ্য দিয়ে কার্যত বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের মনোভাব যাচাই করছে। সেই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারকে এই বার্তা দিতে চাইছে যে যুগপৎ আন্দোলনে যুক্ত রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার শেষ করে নির্বাচন চায়।