আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলা করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আর তখন বিএনপি নামের দলটি দণ্ডিত খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে এবং পলাতক তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পানি ঘোলা করার চেষ্টা করছে।
আজ সোমবার সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপকমিটি মাঠ পরিদর্শনে গিয়ে এ কথা বলেন কমিটির আহ্বায়ক নানক।
আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা নানক বলেন, ‘রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা যখন বৈশ্বিক সংকট, অর্থনীতিক অবস্থা অক্ষুণ্ন রাখার জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা করছেন, তখন বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দল, তাদের দণ্ডপ্রাপ্ত দুজন নেতা খালেদা জিয়া এবং তারেককে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার জন্য পানি ঘোলা করার চেষ্টা করছে। দায়িত্বশীল বিরোধী দল হিসেবে বিএনপির দেশের মানুষের প্রতি যদি কর্তব্যবোধ থাকে, মমত্ববোধ থাকে, তাহলে তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, তারা আর কালবিলম্ব করতে চায় না। তাদের দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা এবং দণ্ডপ্রাপ্ত লন্ডনে অবস্থানরত তারেককে দেশে ফিরে আনাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য। এই দলটির দেশের প্রতি কোনো মমত্ববোধ, দায়িত্ববোধ নেই। তারা অনেক পরিকল্পনা করছে দেশের ভিতর অস্থিতিশীলতার জন্য।’
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘আগামী মাস বিজয়ের মাস। বিজয়ের মাসকে সামনে রেখে বাঙালি জাতি বিজয় দিবস অত্যন্ত উৎসাহ, উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালন করবে। কিন্তু বিএনপির উদ্দেশ্যটা কী? তাদের উদ্দেশ্যটা হলো দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করা, দেশে গোলযোগ সৃষ্টি করা। দেশের মানুষ কেমন আছে, কেমন থাকবে, কেমন রাখার দরকার, সেই বিষয় তাদের মাথায় কোনো দিন ছিল না।’
ডিসেম্বরে বিএনপির সমাবেশের বিষয়ে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘তারা (বিএনপি) ১০ লক্ষ লোক জমায়েত করবে—এই কথাটি তারা চিৎকার করে বলেছে। তাদেরকে অবশ্যই ১০ লক্ষ লোক জমায়েত হতে পারে, এমনতর জায়গায় যেতে হবে। তা ছাড়া এই ঢাকাবাসীকে যদি অশান্ত করেন, বিশৃঙ্খলা করেন, অরাজকতা সৃষ্টি করেন, তাহলে আমাদের তো সন্দেহ থেকেই যায় যে ২০১৪ সালে এই বিএনপি–জামায়াত এ দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করেছে। বাস পুড়িয়েছে। মানুষ পুড়িয়ে মেরে ফেলেছে। রেললাইন উপড়ে ফেলেছে, রেলস্টেশন জ্বালিয়ে দিয়েছে। কাজেই সাপকে বিশ্বাস করা যায়। কিন্তু বিএনপি–জামায়াতকে বিশ্বাস করা যায় না। বিষধর সাপকে নিয়ে আমরা অত্যন্ত সর্তক। দেশবাসীও সর্তক।’
দলীয় সম্মেলনের বিষয়ে মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপকমিটির আহ্বায়ক নানক বলেন, ‘সম্মেলন নিয়ে আনন্দ–উৎসবের কোনো ঘাটতি নাই। আমাদের নেত্রী কঠোরভাবে বলেছেন, বৈশ্বিক এই সংকটের মধ্যে সমস্ত সম্মেলনগুলো অত্যন্ত সীমিত পরিসরে এবং স্বল্প খরচের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত করতে হবে। আমরা সেই নির্দেশনা অনুসরণ করে সকল সম্মেলন সম্পূর্ণ করার জন্য দৃঢ় ও সংকল্পবদ্ধ।’
নানক আরও বলেন, এই উদ্যানে জাতির পিতা পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতিকে মুক্তির পথ দেখিয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। এই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনগুলো করার মধ্য দিয়ে আগামী দিনের পথ রচনা করবে আওয়ামী লীগ।
এ সময় দলের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী সম্মেলনের সব কার্যক্রম চলছে। সবার মধ্যে উৎসাহ–উদ্দীপনা কাজ করছে।
পালিয়ে যাওয়া জঙ্গিদের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘এ দেশের জঙ্গিবাদের সৃষ্টি করেছে বিএনপি। তাদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা করে দেশে একযোগে সিরিজ বোমা হামলা চালিয়েছে। শুধু তা–ই নয়, বিএনপি জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে একুশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আমাদের দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে এই দেশের জঙ্গিবাদ নির্মূল করেছে।’
এ সময় আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মহি প্রমুখ।