সব আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি দুই ‘কিংস পার্টি’

নানা কথা বলে আলোচনার জন্ম দিলেও শেষ পর্যন্ত সাড়া ফেলার মতো কিছু ঘটাতে পারেনি দুই ‘কিংস পার্টি’ তৃণমূল বিএনপি ও বিএনএম।

দেশের রাজনীতিতে ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া দুই দল তৃণমূল বিএনপি এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) জাতীয় সংসদের সব আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি। এর মধ্যে বিএনএম সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে মাত্র ৮২টিতে প্রার্থী দিতে পেরেছে। আর তৃণমূল বিএনপি ২৯০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা জানালেও সেখানে পরিচিত মুখ খুবই কম।

যদিও দল দুটি থেকে সাবেক সংসদ সদস্যসহ বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের অনেকেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন, এমন আলোচনা ছিল। দল দুটির পক্ষ থেকেও নানা চমকের কথা বলা হয়েছিল। নানা কথা বলে এই দুই দলের নেতারা আলোচনার জন্ম দিলেও শেষ পর্যন্ত সাড়া ফেলার মতো কিছু ঘটাতে পারেনি।

‘বিভিন্ন আসন থেকে ৪৭৮ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী ব্যক্তির মধ্যে ৮২ জনকে চূড়ান্ত করেছি। আমরা কোয়ান্টিটিতে নয়, কোয়ালিটিতে বিশ্বাসী। যাঁরা বিজয়ী হওয়ার মতো, তাঁদের তালিকায় রাখা হয়েছে।
বিএনএমের মহাসচিব মো. শাহ্জাহান

গতকাল বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে বিএনএম নিজেদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর ও মহাসচিব মো. শাহ্জাহান স্বাক্ষরিত প্রার্থী তালিকা গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

দল ঘোষিত প্রার্থীদের মধ্যে ছয়জন সাবেক সংসদ সদস্য রয়েছেন। তাঁরা হলেন ফরিদপুর-১ আসনে শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর, বরগুনা-২ আসনে অধ্যাপক আবদুর রহমান, সাতক্ষীরা-৪ আসনে এইচ এম গোলাম রেজা, নীলফামারী-১ আসনে জাফর ইকবাল সিদ্দিকী, জামালপুর-৪ আসনে মামুনুর রশিদ এবং সুনামগঞ্জ-৪ আসনে দেওয়ান শামসুল আবেদিন।

এ ছাড়া দলের মহাসচিব মো. শাহ্জাহান চাঁদপুর–৪, সংগীতশিল্পী ডলি সায়ন্তনী পাবনা-২, আর এ কে সিরামিকসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান ব্রাহ্মণবাড়িয়া–১ আসন থেকে বিএনএমের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। একরামুজ্জামান বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন।

দলীয় শৃঙ্খলাপরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গত মঙ্গলবার সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামানকে বহিষ্কারের কথা জানায় বিএনপি।

দলটির মহাসচিব মো. শাহ্জাহান বলেন, ‘বিভিন্ন আসন থেকে ৪৭৮ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী ব্যক্তির মধ্যে ৮২ জনকে চূড়ান্ত করেছি। আমরা কোয়ান্টিটিতে নয়, কোয়ালিটিতে বিশ্বাসী। যাঁরা বিজয়ী হওয়ার মতো, তাঁদের তালিকায় রাখা হয়েছে।’

দলটিতে এখনো চেয়ারম্যান পদে কারও নাম ঘোষণা করা হয়নি। এ বিষয়ে বিএনএমের মহাসচিব মো. শাহ্জাহান গত ২৭ নভেম্বর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘চেয়ারম্যান যেকোনো সময় এসে যোগ দিতে পারেন। আমরা চমকের অপেক্ষায় আছি।’

তৃণমূলের তালিকায় ‘চমক’ নেই

তৃণমূল বিএনপি ঘোষিত প্রার্থী তালিকাতেও চমক নেই। দলটি জানিয়েছে, ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯০টিতে প্রার্থী দিয়েছে তারা। এদের মধ্যে কতজন রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, সেটি গতকাল রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত জানাতে পারেনি তারা। তবে দল ঘোষিত প্রার্থীদের মধ্যে পাঁচজন সাবেক সংসদ সদস্য রয়েছেন।

তাঁরা হলেন মৌলভীবাজার-২ আসনে এম এম শাহীন, লক্ষ্মীপুর-১ আসনের এম এ আউয়াল, সাতক্ষীরা-৪ আসনের এইচ এম গোলাম রেজা, ঝিনাইদহ-২ আসনে নুরুদ্দিন আহমেদ ও মেহেরপুর-২ আসনে আবদুল গণি।

তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন সমশের মবিন চৌধুরী সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ), নির্বাহী চেয়ারপারসন অন্তরা হুদা মুন্সিগঞ্জ-১ ও মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার নারায়ণগঞ্জ–১ (রূপগঞ্জ) আসন থেকে নির্বাচন করবেন।