দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেখতে তাঁর গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় গেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক। আজ বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ফিরোজায় যান তিনি।
প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠান হয়। ব্রিটিশ হাইকমিশনার খালেদা জিয়াকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান এবং তার স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন।
সাক্ষাতের পরে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘ম্যাডামের স্বাস্থ্য নিয়ে কূটনৈতিক মহলে শঙ্কা ছিল, ওনার সুস্থতা নিয়ে সবার একটা প্রশ্ন ছিল। যেহেতু ম্যাডাম একটা পর্যায়ে কূটনীতিকদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারছেন…দেশে একটা মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে এই পরিবর্তনে। বাংলাদেশে মুক্ত পরিবেশে কুটনীতিকেরা তাদের কাজগুলো এখন করতে পারছেন।’
আমীর খসরু বলেন, ‘তাঁদের প্রথম জানার বিষয় ছিল, ম্যাডামের শরীর কেমন আছে, ভালো আছে কি না? ওনার চিকিৎসার জন্য বাইরে যাওয়ার প্রস্তুতি আছে কি না… এসব বিষয়ে আলোচনা করেছেন। দ্বিতীয় কথা হয়েছে এই পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ কোথায় যাচ্ছে, যে নতুন প্রেক্ষাপটে আমরা কোথায় যাচ্ছি, বাংলাদেশ কোথায় যাচ্ছে এই বিষয় নিয়ে ম্যাডামের সঙ্গে কথা বলেছেন।’
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান প্রথম আলোকে জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন ব্রিটিশ হাইকমিশনারসহ অতিথিদের স্বাগত জানান। খালেদা জিয়ার জন্য চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক শাহাবুদ্দিন তালুকদার, এফ এম সিদ্দিকী ও বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরদিন নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়। ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, হৃদ্রোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। সর্বশেষ গত ২ জুলাই খালেদা জিয়া হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন। খালেদা জিয়ার হৃদ্যন্ত্রে তিনটি ব্লক ছিল। আগে একটি রিং পরানো হয়েছিল। বিদেশি চিকিৎসক ও মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে গত ২৩ জুন তাঁর হৃদ্যন্ত্রে স্থায়ী পেসমেকার বসানো হয়।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ম্যাডামকে বিদেশে নিতে তার যে দীর্ঘ সময়ের জার্নি সে বিষয়ে তার প্রস্তুতির বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি।’
বিএনপির দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারেন।