দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করে সংসদকে অর্থবহ করার জন্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘সংসদকে অর্থবহ করুন। আপনারা সরকারের সমালোচনা করতে পারেন। তাতে আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না। কিন্তু আপনাদের একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে যে আপনাদের কাজটা হতে হবে দেশ ও জনগণের কল্যাণের জন্য।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল রোববার সন্ধ্যায় গণভবনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের সঙ্গে এক বৈঠকে এ কথা বলেন।
৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২২৩টি আসন পেয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। এ ছাড়া জাতীয় পার্টি ১১টি এবং ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ ও কল্যাণ পার্টি একটি করে আসনে জয়লাভ করে। এর বাইরে এবার ৬২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে জিতেছেন। আগামীকাল মঙ্গলবার দ্বাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হতে যাচ্ছে।
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের সংসদে ভূমিকা রাখার আহবান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, সরকারি দলের বাইরে যাঁরা থাকেন, তাঁদের অনেক সুবিধা থাকে। যেকোনো বিলের ওপরই কথা বলার সুযোগ থাকে। এখানে অনেক প্রবীণ সংসদ সদস্য আছেন, তার ওপর সরকার প্রতিবারই সংসদ নির্বাচনের পর ওরিয়েন্টেশন কোর্স করিয়ে থাকে। কাজেই এটাকে (সংসদ) অর্থবহ করা ও গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘আমরা চাই, আপনারা নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে মানুষের কাছে যা যা ওয়াদা দিয়ে এসেছেন, সেগুলো আপনাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। কিন্তু সেখানেও আপনাদের মিতব্যয়ী হতে হবে আর স্বচ্ছতা থাকতে হবে। প্রকল্প বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও যেটা আমাদের দেশের জন্য অর্থবহ, সে ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। সেটাও আপনাদের মাথায় রাখতে হবে। আর সংসদে আপনারা আপনাদের ভূমিকা নেবেন। আমাদের বলার কিছু নেই। সবাই আমাদের থেকে দূরে গিয়েও আবার ফিরে এসেছেন। সেটাই হচ্ছে বড় কথা। আপনারা সংসদে বসবেন এবং আপনাদের যে দায়িত্ব সেটা পালন করবেন।’
গতকাল গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছে যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশবিষয়ক সর্বদলীয় সংসদীয় দলের (এপিপিজি) ভাইস চেয়ার ও ইন্দো-ব্রিটিশবিষয়ক এপিপিজির চেয়ার বীরেন্দ্র শর্মার নেতৃত্বে যুক্তরাজ্যের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদল।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি সব সময় জনগণের ম্যান্ডেটের পরিবর্তে অন্য শক্তির সহায়তায় ক্ষমতায় যেতে চায়। যখনই নির্বাচনের সময় আসে, তখনই তারা (বিএনপি) অন্য কোনো শক্তির সন্ধান করে, যারা তাদের ক্ষমতায় বসাতে পারে।
এদিকে বৈঠকে শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে ও সেখানে মর্যাদাপূর্ণ জীবন নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বিশ্বের উচিত রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের উপায় বের করা, যাতে তারা স্বদেশে ফিরে গিয়ে একটি সুন্দর জীবন যাপন করতে পারে।
প্রতিনিধিদলের অপর সদস্যরা হলেন সাবেক কনজারভেটিভ মন্ত্রী পল স্কুলি, হাউস অব কমন্স সিলেক্ট কমিটির মেম্বার ফর ফরেন অ্যাফেয়ার্স নিল কোয়েল, বিরোধীদলীয় হুইপ অ্যান্ড্রু ওয়েস্টার্ন ও সিনিয়র সংসদীয় সহকারী ডমিনিক মফিট।