বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আয়ু শেষ হয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। তাঁরা বলেন, লুটপাটের ভাগীদার ছাড়া কেউ আওয়ামী লীগের পাশে নেই। ক্ষমতায় থাকতে বিভিন্ন দেশে ও দূতাবাসগুলোতে দৌড়াচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা এসব কথা বলেন। সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আয়োজিত গণমিছিলের আগে এই সমাবেশের আয়োজন করে গণতন্ত্র মঞ্চ।
সরকার পতনের আন্দোলন বিজয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, ‘আওয়ামীপন্থী ব্যবসায়ীরা এখন চিন্তায় পড়ে গেছেন। আওয়ামী লীগের নেতারা সব জায়গায় দৌড়াচ্ছেন। যত চেষ্টাই করেন, আন্দোলন থামাতে পারবেন না। সরকার সংবিধানের যে পঞ্চদশ সংশোধনীর দোহাই দেয়, তার কোনো বৈধতা নেই।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, পুলিশ মিছিলে গুলি চালিয়ে হত্যা করা শুরু করেছে। ইতিহাস বলে, যে সরকার মিছিলে গুলি করে, তাদের আয়ু শেষ হয়ে আসে। শেখ হাসিনার সরকারেরও আয়ু নেই, তার লক্ষণ পরিষ্কার। এখন বিদেশি দূতদের খুশি করার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। ভারতে প্রতিনিধিদল যায়, চীনে শরিকেরা যায়।
গত মঙ্গলবার ওয়াশিংটনভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) এক জনমত জরিপে এসেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সরকারের কার্যক্রমের প্রতি সমর্থন রয়েছে ৭০ ভাগ মানুষের। গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশে নেতারা এই জরিপের ফলাফলের সমালোচনা করেন।
জরিপের ফলাফলকে ‘ভুয়া’ মন্তব্য করে জোনায়েদ সাকি বলেন, মানুষের চোখে ধুলা দিতে বিদেশি সংস্থাকে দিয়ে জরিপ করিয়েছে সরকার। এতই যদি জনপ্রিয়তা, তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেন। এই জরিপ জনগণের মতামতের প্রতিফলন নয়।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ভাড়াটে গবেষণাপ্রতিষ্ঠানকে দিয়ে জরিপ চালানো হয়েছে। ৭০ শতাংশ মানুষের সমর্থন থাকলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় কেন? লুটপাটের ভাগীদারদের ছাড়া কেউ এই সরকারের পাশে নেই।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, যারা দেশ থেকে অর্থ পাচার করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
বিএনপির নিবন্ধন বাতিল ও দলটির রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি), স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে যুবলীগ।
বিএনপির নিবন্ধন বাতিলের প্রসঙ্গ টেনে সমাবেশের সভাপতি বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, দেশের প্রধান বিরোধী দল যারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করছে, তাদের নিষেধাজ্ঞা দিতে চায়। অথচ জনগণ অনেক আগেই আওয়ামী লীগকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। সরকারের আগুন সন্ত্রাসের খেলা জনগণ ধরে ফেলেছে। সরকার জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চাইলে দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট হবে।
সমাবেশ শেষে একটি মিছিল প্রেসক্লাব থেকে শুরু করে পল্টন, জিরো পয়েন্ট ঘুরে আবার পল্টন মোড়ে এসে শেষ হয়। মিছিল শেষে জানানো হয়, সরকার পতনের এক দফা দাবিতে খুব শিগগির যুগপৎ আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।