দেশকে আরও এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনা সমস্ত রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দেশে ফিরে যেমন আওয়ামী লীগকে পুনরায় সংগঠিত করেছেন, তেমনি দেশকে বিস্ময়করভাবে এগিয়ে নিয়ে বিশ্বের দরবারে অনন্য মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন।

‘১৭ মে ১৯৮১ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদ্‌যাপন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে প্রায় ১৯ বার হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল। কিন্তু বারবার মৃত্যু উপত্যকা থেকে ফিরে এসেও তিনি বিচলিত হননি। তিনি মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েছেন, জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে পথ চলেছেন কিন্তু জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের কাফেলা থেকে কখনো বিচ্যুত হননি।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরের পর বিএনপির নেতাদের মাথা আরও খারাপ হয়ে গেছে। তারা অনেক চেষ্টাও করেছিল দেখাসাক্ষাৎ করার। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র বার্তা দিয়ে গেছে, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) সম্পর্ককে আরও গভীর করতে চায়, এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। এ জন্য মাথা খারাপ বিএনপি এখন খেই হারিয়ে ফেলেছে।’

স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহজাহান আলমের সভাপতিত্বে ও বঙ্গবন্ধু একাডেমির মহাসচিব হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য বলরাম পোদ্দার, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম প্রমুখ।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) প্রতিনিধি সাম্বল রিজভি।

ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সাম্বল রিজভি মন্ত্রীকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে তাদের সেনাবাহিনী ও বিবদমান গোষ্ঠীগুলোর চলমান সশস্ত্র সংঘাত, মিয়ানমার বাহিনীর সদস্যদের বাংলাদেশ সীমান্তে পালিয়ে আসা, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জীবনযাত্রার ওপর আলোকপাত করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাত প্রায় শত বছরের পুরোনো। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর কার্যকর আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধির বিকল্প নেই। ভারত ও চীনকে এ বিষয়ে আরও তৎপর করতে ইউএনএইচসিআর কাজ করতে পারে।

ভাসানচরে আরও রোহিঙ্গা স্থানান্তর ও সেখানকার স্থাপনা নিয়মিত মেরামতের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন হাছান।

পরে বাংলাদেশে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল সিনশেত্রু সাক্ষাৎ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে। এ সময় দ্বিপক্ষীয় বিষয়াবলি নিয়ে আলোচনা হয়।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রপ্তানি গন্তব্য স্পেন। দেশটিকে দেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও আইটি ভিলেজগুলোতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান মন্ত্রী।

পাশাপাশি ‘মাইগ্রেশন মবিলিটি অ্যাগ্রিমেন্ট’ করার বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত হন মন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূত। উল্লেখ্য, বর্তমানে গ্রিসের সঙ্গে এই চুক্তি রয়েছে এবং ইতালি, অস্ট্রিয়া ও মাল্টার সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে আলাপ চলছে।

রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল জানান, স্পেনে প্রায় ৬০ হাজার বাংলাদেশি আছেন, যাঁরা স্পেনের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছেন। তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে সুবিধাজনক সময়ে স্পেন সফরের আমন্ত্রণ জানান।