বাজেটে স্বল্প আয়ের মানুষের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে: গণফোরাম

মানববন্ধনে গণফোরামের নেতা–কর্মীরা। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের মাধ্যমে নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে মনে করে গণফোরাম। দলটির নেতাদের দাবি, এই বাজেট গরিবের বিরুদ্ধে। এটা একটি সিন্ডিকেটের বাজেট।

আজ শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন গণফোরামের (ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন অংশ) নেতারা।

‘গণবিরোধী বাজেটের’ প্রতিবাদে ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানোর দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

মানববন্ধনে গণফোরামের নেতারা বলেন, আগামী নির্বাচনে বর্তমান সরকার নির্বাচিত হলে মানুষ আবার অধিকারবঞ্চিত হবে। জাতীয় সরকারের অধীনে এই সরকারকে নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচন, দ্রব্যমূল্য কমানোসহ জনগণের অধিকার আদায়ের দাবিতে গণফোরাম এখন থেকে নিয়মিত কর্মসূচি পালন করবে।

গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান বলেন, এই বাজেটে নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাঁরা কর পরিশোধ করার যোগ্য নন, এবার তাঁদেরও সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা দিতে হবে।

গণফোরাম এই বাজেট মানে না, উল্লেখ করে মিজানুর রহমান বলেন, ‘দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে, হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণখেলাপিদের কাছে গেছে—এসব অর্থ কীভাবে উদ্ধার করা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেসব বিষয়ে বাজেটে কিছুই উল্লেখ করা হয়নি। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে যাঁরা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হচ্ছেন, তাঁদের সুরক্ষার কথা বলা হয়েছে বাজেটে।’

গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, ‘১৭ কোটি মানুষের সামনে একটা প্রতারণামূলক বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে। এই বাজেট গরিবের বিরুদ্ধে। এটা একটা সিন্ডিকেটের বাজেট।’

দেশে সরকার নেই, একটা সিন্ডিকেট আছে—এমন অভিযোগ করে মোকাব্বির খান আরও বলেন, ‘বিদ্যুৎ খাতে একটি সিন্ডিকেটকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। জনগণের অর্থ যারা লোপাট করবে, জনগণের অধিকার যারা হরণ করবে, সেই লুটেরাদের বিরুদ্ধে মানুষ যেন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করতে পারে, সে জন্য বিদ্যুৎ খাতে ইনডেমনিটি (দায়মুক্তি) আইন করা হয়েছে। আগামী নির্বাচনে আবার সেই সিন্ডিকেট নির্বাচিত হলে ১৭ কোটি মানুষ আবার অধিকারবঞ্চিত হবে।’

একটি জাতীয় সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন করার দাবি জানিয়ে এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমরা চাতুরীর নির্বাচন দেখতে চাই না।’ ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে পরামর্শ করে দ্রুতই পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তিনি।

প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট সংশোধনের দাবি জানান গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোশতাক আহমেদ।

গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সেলিম আকবরের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোমেন চৌধুরী।

মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন গণফোরামের নেতা–কর্মীরা।