ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উৎখাত হওয়া স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের অস্ত্র ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ সংস্কারের পরিবর্তে সরাসরি বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের নেতারা। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহবাগে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তাঁরা এ দাবি জানান।
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে চালানো গণহত্যাকারীদের একাধিক ট্রাইব্যুনালে দ্রুততম সময়ে বিচার করা, সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল ও সীমান্ত হত্যা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে নেতারা শহীদদের সংখ্যা নির্ধারণ, আহত ও শহীদ পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ ও দ্রুত পুনর্বাসনের দাবি জানান।
সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রাগীব নাঈম বলেন, গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা এ দেশের মানুষের কণ্ঠরোধ করতে যেসব অস্ত্র ব্যবহার করেছে, এর অন্যতম হচ্ছে সাইবার নিরাপত্তা আইন। স্বৈরাচারের এই অস্ত্র সংশোধন না করে তা ছুড়ে ফেলতে হবে, বাতিল করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘হাজারো ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে যে সরকার গঠিত হয়েছে, গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণকারী হিসেবে সেই সরকারের প্রতি আমরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে রেখেছি। গণ–আকাঙ্ক্ষাকে বিপরীত ভাবনার প্রতিফলন অন্তর্বর্তী সরকারের মাঝে দেখলে আমরা চুপ করে থাকব না। পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে একাধিক ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার করতে হবে।’
ছাত্র ইউনিয়নের এই অংশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু বলেন, ‘একদিকে আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের আলাপ শুনতে পাই। আবার অন্যদিকে তাঁরাই দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক সভা করে চলেছেন। আমরা তাঁদের মনে করিয়ে দিতে চাই, বাংলাদেশ বাকশালকে কখনো মানেনি, মানবেও না।’
মেঘমল্লার বসু আরও বলেন, ‘সীমান্তে গত ১৫ বছরে ৬৫০ জনের বেশি মানুষকে বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারাতে দেখেছি। সীমান্তে আর একটি প্রাণও যেন না ঝরে, এমন পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণের বিকল্প নেই।’
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের এই অংশের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনির সঞ্চালনায় সমাবেশে সংগঠনের সহসভাপতি শিমুল কুম্ভকার, সাংগঠনিক সম্পাদক তামজিদ হায়দার, ঢাকা মহানগর সংসদের সভাপতি ফয়সাল মাহমুদ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সহসভাপতি অন্তু অরিন্দম ও আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করা রিকশাচালক নাজ্জু শেখ বক্তব্য দেন।