আজ বেলা একটায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এই শোভাযাত্রা বের হবে। উপস্থিত থাকবেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা।
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের শোভাযাত্রায় ঢাকায় বড় জমায়েত করার লক্ষ্য বিএনপির। আজ বেলা একটায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এই শোভাযাত্রা বের হবে। সেটি কাকরাইল মোড়, শান্তিনগর, মালিবাগ হয়ে মগবাজার চৌরাস্তা পর্যন্ত গিয়ে শেষ হবে। শোভাযাত্রায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
দলের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, এবার ভিন্ন একটি প্রেক্ষাপটে বিজয় শোভাযাত্রা হচ্ছে। গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ পুলিশের হামলায় পণ্ড হয়। এর পর থেকে পুলিশের গ্রেপ্তার অভিযানের মুখে সারা দেশের অধিকাংশ নেতা-কর্মী আত্মগোপনে রয়েছেন।
এমন প্রেক্ষাপটে আজ বিজয় দিবস উপলক্ষে শোভাযাত্রা বের করার প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। দলের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা এই শোভাযাত্রার আয়োজন করছে। তবে গতকাল পর্যন্ত ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) শোভাযাত্রা বের করার অনুমতি দেয়নি।
বিএনপি গত বুধবার শোভাযাত্রার অনুমতি চেয়ে ডিএমপি কমিশনার বরাবর চিঠি দিয়েছে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের প্রচার সম্পাদক মাহবুবুর রহমান ডিএমপি কার্যালয়ে যান। তাঁরা অতিরিক্ত কমিশনার খ. মহিদ উদ্দিনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় নিতাই রায় চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখনো ডিএমপি থেকে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। সন্ধ্যা ছয়টায় আমি ফোন দিয়েছিলাম। অতিরিক্ত কমিশনার (খ. মহিদ উদ্দিন) বলেছেন, এখন পর্যন্ত তাঁকে কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়নি। অফিশিয়ালি সিদ্ধান্ত হলে তিনি জানিয়ে দেবেন।’
২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর একদিকে হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি, অন্যদিকে পুলিশের গ্রেপ্তার–আতঙ্ক—দুটি মিলে এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে বিজয় শোভাযাত্রা করার সিদ্ধান্ত হয়। মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর থেকে দেড় মাসের বেশি সময় ধরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলছে। সেখানে পুলিশ পাহারা রয়েছে।
বিএনপির সূত্র জানিয়েছে, বিজয় শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারভীতি কাটাতে চান নীতিনির্ধারকেরা। এর আগে ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে বিএনপি সারা দেশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার ৪৩ দিন পর ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ওই মানববন্ধনে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী জমায়েত হন।
আজ বিজয় শোভাযাত্রায় আরও বেশি নেতা-কর্মীর উপস্থিতি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সাংগঠনিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ঢাকা মহানগরের সব থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিট বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের শোভাযাত্রায় থাকতে বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ ঢাকার আশপাশের কয়েকটি জেলা ও মহানগর থেকেও নেতা-কর্মীরা যোগ দিতে পারেন।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘চারদিকে এত ভয়ভীতি, জুমার নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা বিজয় দিবসের কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করছি। আশা করি, সব বাধা উপেক্ষা করে হাজার হাজার নেতা-কর্মী শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন।’