বর্তমান সরকারের পতন ঘটাতে ধাক্কা লাগবে না, কাতুকুতু দিলেও এই সরকার পড়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, সরকারের অবস্থা এত খারাপ, টাকা নেই, পুলিশ-প্রশাসন তার কথা শুনতে চায় না। জনগণ তাদের মিথ্যায় আর বিভ্রান্ত হয় না।
সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশের সভাপতির বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান এসব কথা বলেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও ১০ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। অন্যান্য দাবির সঙ্গে আজকের সমাবেশকে ১৯৭৫ সালের বাকশাল গঠনের দিনকে ‘গণতন্ত্র হত্যা’ দিবস উল্লেখ করে তা যুক্ত করা হয়েছে।
বর্তমান সরকারকে গরিব ও মিসকিন উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা নেই। পণ্য নিয়ে জাহাজ আটকে আছে। ইভিএম প্রকল্পও বাদ দেওয়া লাগল। কারণ, এ সরকারের কাছে টাকা নেই। ভিক্ষা করতে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংকের পিছে পিছে ঘুরছে।
সরকারের মন্ত্রীদের মিথ্যুক ও ৪২০ দাবি করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান বলেন, আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করলেন, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর সঙ্গে নাকি আলাপ হয়েছে, র্যাবের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে। অথচ মার্কিন দূতাবাস বলল, মন্ত্রীর সঙ্গে এমন কোনো আলোচনা হয়নি।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সরকার আরেকটা তামাশার একতরফা নির্বাচন করতে চায়। বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আওয়ামী লীগ উসকানি দিচ্ছে। বিএনপিসহ অন্যান্য দল ও জোটের যুগপৎ আন্দোলনের ইশতেহার কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
বর্তমান সরকার নতুন কায়দায় দেশে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করছে দাবি করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকার কর্তৃত্ববাদী মডেলে নির্বাচন করতে চায়। এই মডেলে প্রার্থী থাকে, প্রচার হয়। শুধু ভোটের দিন জনগণ ভোট দিতে পারে না। ক্ষমতাসীন সরকার ঠিক করে কারা নির্বাচনে জিতবে। সরকার বিরোধীদের আন্দোলন নানাভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।
গত ৩০ ডিসেম্বর থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত বিএনপিসহ সরকারবিরোধী সব দল ও জোট তিনটি কর্মসূচি পালন করে। দেখা গেছে, তিনটি কর্মসূচিতে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক উপস্থিত ছিলেন না। আজকের গণতন্ত্র সমাবেশে যোগ দেন নুরুল হক।
নুরুল হক বলেন, বর্তমান ব্যবস্থার সঙ্গে বাকশালের পার্থক্য নেই। রাজনীতি করার অধিকার নেই, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই। নির্বাচন আসন্ন হলে এই সরকার সাম্প্রদায়িক, জঙ্গিবাদ ট্রাম্প কার্ড খেলে। জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে নিতে নানা গুজব ছড়ায় সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে। আগামীকাল সম্ভব হলে আগামীকালই এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। তিনি বলেন, অর্থ পাচারকারীদের তালিকা করা হচ্ছে। ক্ষমতার বদল হলে তিন মাসের মধ্যে পাচার হওয়া তিন লাখ কোটি টাকা দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
সমাবেশ থেকে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। যুগপৎ আন্দোলনের এটি হবে পঞ্চম কর্মসূচি।