আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘এবারের যে সম্মেলন, যে কমিটি হবে, এখানে তেমন একটা পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কম।’
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের সম্মেলনস্থলের প্রস্তুতি পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। আগামী শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) সেখানে আওয়ামী লীগের ২২তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রয়োজনে পরবর্তী সম্মেলন নির্বাচনের পর আগামও করতে পারি। তখন একটা বড় ধরনের পরিবর্তন হয়তো হবে। আপাতত আমরা বড় ধরনের কোনো পরিবর্তনের ব্যাপারে ভাবছি না।’ এ ছাড়া সবকিছু কাউন্সিলর অভিব্যক্তির ওপর নির্ভর করবে। তাই এসব নিয়ে আপাতত কোনো ভবিষ্যদ্বাণী করতে চান না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
দলের সাধারণ সম্পাদকের পদের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সবার দৃষ্টি দলের সাধারণ সম্পাদক পদের দিকে। এ পদে প্রার্থীদের অনেকের ইচ্ছা থাকতে পারে। অন্তত গণতান্ত্রিক দল হিসেবে।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘আমার জানা মতে, এখানে অন্তত ওই পদের ১০ প্রার্থী আছেন। এই পদে আসতে চান। কে হবেন, এটা নেত্রীর ইচ্ছা এবং কাউন্সিলরদের মতামতের ওপর নির্ভর করছে। সবকিছু প্রতিফলন ঘটবে দ্বিতীয় অধিবেশনে, তিনটার পর যেটা শুরু হবে, সেখানে। কাউন্সিলর মতামত নিয়েই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কাজেই আমি কারও নাম বলতে পারব না।’
সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা সংকটে আছি। এ সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দিতে এই সম্মেলনে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ উপস্থিতি হবে। সুশৃঙ্খল ও সুসংগঠিত উপস্থিতির মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছি।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘আমরা আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। আগামী সরকার পরিচালনার জন্যও আমরা প্রস্তুত। আগামী নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এ দেশকে সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে জাতির কাছে অঙ্গীকার রেখেছি। আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ এবং সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাব। আমাদের মূল লক্ষ্যই উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগকে আগামী নির্বাচনের জন্য সুশৃঙ্খল, সুসংগঠিত এবং ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ গড়ে তুলতে চাই।’
ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং তাঁর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সহযোগিতায় ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা নির্মাণ করেছি। এখন আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ। ২০৪১ পর্যন্ত আমাদের যে ভিশন উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশের, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা, সেই লক্ষ্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাব।’ এবারের সম্মেলনটা চ্যালেঞ্জিং টাইম চলছে বলেও জানান তিনি।
বর্তমান কমিটির বিতর্কিত কিছু নেতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এবারের নির্বাহী কমিটি অত্যন্ত সক্রিয় কমিটি। কাউকে নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। যদি থাকে, নেত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে পারফেক্ট কেউ না। ভুলত্রুটি নিয়েই মানুষ। কাজেই পূর্ণতা খুঁজতে গেলে অনেক কিছু চিন্তাভাবনা করতে হবে।’
সাধারণ সম্পাদক পদে হ্যাটট্রিক করছেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো প্রেডিকশন করতে চাই না। টাইম ইস নট ম্যাচিউরড টু প্রেডিক্ট। এটা আমি করতে পারি না। তাহলে কাউন্সিলরদের চিন্তাভাবনাকে অবমূল্যায়ন করা হয়। অন্তত ১০ জন আছে, যারা সাধারণ সম্পাদক হওয়ার যোগ্য। সে ধরনের অভিজ্ঞ নেতৃত্ব আমাদের দলে আছে।’
বিএনপিকে নিমন্ত্রণ জানানো হবে কি না, এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘বিএনপি নিয়ে এত আগ্রহ কেন আপনার? এটা আমাদের দলের ব্যাপার। দাওয়াত আমরা সবাইকে দেব। নিবন্ধিত সব দলকে দাওয়াত দেওয়া হবে।’
এ সময় ওবায়দুল কাদের এবারের সম্মেলন স্মরণকালের ঐতিহাসিক সম্মেলন, উপস্থিতি বেশি হবে বলে মন্তব্য করেন এবং জাগরণের ঢেউ হবে বলেও জানান।
পরে তিনি সম্মেলনের মঞ্চ তৈরিসহ অন্যান্য কাজের আনুষঙ্গিক কাজের প্রস্তুতি পরিদর্শন করেন।