বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আবার কিছুটা খারাপ হওয়ায় চিকিৎসকেরা তাঁকে তাঁর বাসভবনেই সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বুধবার রাত ১২টার দিকে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন।
জাহিদ হোসেন জানান, বুধবার দুপুরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কিছু খারাপ হয়। তিনি অসুস্থবোধ করেন। এরপর মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা খালেদা জিয়ার বাসভবনে গিয়ে তাঁর স্বাস্থ্যের কিছু পরীক্ষা করেন।
খালেদা জিয়াকে ইফতারের পর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল।
তবে জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, ইফতারের পর থেকে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বাসভবনে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা দেওয়ার পর তিনি অনেকটা সুস্থবোধ করেন। মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা তাঁকে বাসভবনেই সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
জাহিদ হোসেন উল্লেখ করেন, এরপরও যদি হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজন হয়, তখন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হবে।
রাত ১২টার দিকে গুলশানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বাসভবনের সামনে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে ব্রিফ করেন চিকিৎসক জাহিদ হোসেন।
১৩ মার্চ খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে তাঁর স্বাস্থ্যের কিছু পরীক্ষা করা হয়েছিল। সে সময় এক দিন হাসপাতালে থেকে স্বাস্থ্যের বিভিন্ন পরীক্ষা শেষে খালেদা জিয়া বাসায় ফিরেছিলেন ১৪ মার্চ।
গত বছরের ৯ আগস্ট খালেদা জিয়াকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তখন পাঁচ মাসের বেশি সময় চিকিৎসা শেষে গত ১১ জানুয়ারি তাঁর গুলশানের বাসায় ফেরেন বিএনপির চেয়ারপারসন।
সে সময় উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে তাঁর পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও অনুমতি পাওয়া যায়নি। এমন পরিপ্রেক্ষিতে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে খালেদা জিয়ার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তাঁর স্বাস্থ্য কিছুটা স্থিতিশীল হলে সে দফায় পাঁচ মাসের বেশি সময় পর তাঁকে বাসায় নেওয়া হয়েছিল।
দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপারসন ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দী হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দী ছিলেন তিনি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাজা ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিল। তখন থেকে ছয় মাস পরপর তাঁর সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।