রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকায় আজ শুক্রবার কাউকে সন্দেহ হলেই তল্লাশি করছে পুলিশ। কয়েকজনকে আটক করে থানায় নিতেও দেখা গেছে।
আজ দুপুরে নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে তিন যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে যেতে দেখা যায়। এ ছাড়া বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নাইটিঙ্গেল মোড়ে বিএনপির মিছিল থেকে দলটির এক কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
নয়াপল্টন এলাকায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা বলছেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা যেন অবস্থান নিতে না পারেন, সে জন্য পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ তাঁরা নিয়েছেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় এই এলাকায় সাধারণ মানুষকে আসতে দেওয়া হচ্ছে না। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবেই এমনটা করা হচ্ছে।
আজ বেলা পৌনে ১টার দিকে নাইটিঙ্গেল মোড়ে সন্দেহজনক ঘোরাফেরার কারণে সরফরাজ নামের একজনকে আটক করে পুলিশ। তিনি নিজেকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের যুবদল নেতা বলে পরিচয় দিয়েছেন।
বেলা ১টার দিকে নাজমুল ও আল আমিন নামের দুজনকে নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে আটক করা হয়। আল আমিন নিজেকে গাড়িচালক হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। নাজমুল বলেছেন, তিনি ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় ভাইয়ের কাছে এসেছেন।
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) আবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, সকাল থেকেই তিনি নয়াপল্টন এলাকায় দায়িত্ব পালন করছেন। এই এলাকায় কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে তাঁরা তৎপর রয়েছেন। নিরাপত্তার কারণে এই এলাকায় সন্দেহজনকভাবে কাউকে ঘোরাঘুরি করতে দেখলে তাঁরা তল্লাশি করছেন। নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে চারজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হয়েছে।
আজ পল্টনের ফকিরাপুল এলাকা থেকে কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত বিএনপির নেতা-কর্মীরা মিছিল করেন। মিছিলে ২০ থেকে ৩০ জন নেতা-কর্মী অংশ নেন। পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন মিয়া বলেন, মিছিল থেকে একজনকে আটক করা হয়েছে।
তবে আটক হওয়া ব্যক্তির নাম তিনি জানাননি। সাঁজোয়া যান নিয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় এলাকায় পুলিশকে টহল দিতে দেখা গেছে। নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল পর্যন্ত সড়কে দেওয়া হয়েছে ব্যারিকেড। এই এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এ সড়কেই বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। কার্যালয়ের ফটকে তালা ঝুলছে। দুপুর পর্যন্ত কাউকে কার্যালয়ে যেতে দেখা যায়নি।
আগামীকাল শনিবার ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের কর্মসূচি রয়েছে। কিন্তু এখনো সমাবেশের স্থান বুঝে পায়নি বিএনপি। সমাবেশস্থল নির্ধারণ নিয়ে আলোচনার মধ্যে গত বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে একজন নিহত হন।
সংঘর্ষের ঘটনায় চারটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ২ হাজার ৯৭৫ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। চার মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৮৫ জনকে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বিএনপির কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা রয়েছেন।