বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. সাহাবুদ্দিন। আগামী ২৪ এপ্রিল তাঁর নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করার কথা। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৩ এপ্রিল।
তার মানে আর দুই মাসের কিছু বেশি সময় পর বঙ্গভবনের নতুন বাসিন্দা হতে যাচ্ছেন মো. সাহাবুদ্দিন।
রাষ্ট্রপতি কী কী ক্ষমতা ও সুযোগ-সুবিধা পান, তা বলা আছে দেশের সংবিধান ও দ্য প্রেসিডেন্টস (রেমুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) (সংশোধন) অ্যাক্টে। স্বাভাবিকভাবেই নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনও এসব ক্ষমতা ও সুযোগ–সুবিধা ভোগ করবেন।
দ্য প্রেসিডেন্টস (রেমুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) (সংশোধন) অ্যাক্ট অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির মাসিক বেতন হবে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এই টাকা আয়করমুক্ত। আগে এই বেতন ছিল ৬১ হাজার ২০০ টাকা। সর্বশেষ ২০১৬ সালে তা বাড়ানো হয়। রাষ্ট্রপতি আপ্যায়নের (এন্টারটেইনমেন্ট) জন্য বছরে ভাতা পান। এই টাকার নিরীক্ষা হবে না। রাষ্ট্রপতির জন্য সরকারি বাসভবন (বঙ্গভবন) থাকবে, যার সাজসজ্জা ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ দেবে সরকার। স্বাভাবিকভাবে রাষ্ট্রপতি পরিবহন (গাড়ি) সুবিধা পাবেন। রাষ্ট্রপতি অফিশিয়াল কাজে দেশের বাইরে গেলে সরকার নির্ধারিত ভাতা পাবেন। রাষ্ট্রপতির স্বেচ্ছাধীন তহবিল বছরে দুই কোটি টাকা।
রাষ্ট্রপতি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা দেশের যেকোনো হাসপাতালে বিনা খরচে চিকিৎসার সুবিধা পাবেন। চিকিৎসকদের পরামর্শে দেশের বাইরে চিকিৎসার প্রয়োজন হলে সেই খরচও সরকার দেবে।
রাষ্ট্রপতি বিমানে ভ্রমণ করলে বিমাসুবিধার ব্যবস্থা আছে। এই বিমাসুবিধা এখন বছরে ২৭ লাখ টাকা। ২০১৬ সালের আগে ছিল ১৫ লাখ টাকা। এ রকম আরও বেশ কিছু সুবিধা পান রাষ্ট্রের ১ নম্বর ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি।
সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের অন্য সব ব্যক্তির ঊর্ধ্বে। তিনি কেবল প্রধানমন্ত্রী ও ৯৫ অনুচ্ছেদের (১) দফা অনুসারে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্র ছাড়া অন্য সব দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী পালন করবেন। তবে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে আদৌ কোনো পরামর্শ দিয়েছেন কি না এবং দিলে কোনো আদালত সেই সম্পর্কে কোনো প্রশ্নের তদন্ত করতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় ও পররাষ্ট্রনীতি–সংক্রান্ত বিষয় সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত রাখবেন এবং রাষ্ট্রপতি অনুরোধ করলে যেকোনো বিষয় মন্ত্রিসভায় বিবেচনার জন্য পেশ করবেন।
কিছু ক্ষেত্রে ক্ষমা করার অধিকার আছে রাষ্ট্রপতির। কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের দেওয়া দণ্ড মার্জনা, বিলম্ব ও বিরতি করতে পারেন রাষ্ট্রপতি। এ ছাড়া যেকোনো দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা কমানোর ক্ষমতা আছে রাষ্ট্রপতির।
রাষ্ট্রপতির মেয়াদ কার্যভার গ্রহণের তারিখ থেকে পাঁচ বছর। তবে রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ শেষ হওয়া সত্ত্বেও তাঁর উত্তরাধিকারী কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত তিনি নিজ পদে বহাল থাকবেন। একই ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি রাষ্ট্রপতি হতে পারবেন না।