২৮ অক্টোবর ঢাকায় দুই দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। দুই পক্ষের শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টায় রাজনীতি কোন দিকে এগোচ্ছে—এ বিষয়ে সাখাওয়াত হোসেনের অভিমত নিয়েছে প্রথম আলো।
নির্বাচন ঘিরে দেশে এখন একধরনের সংকট চলছে। প্রতি পাঁচ বছর পর এই সংকট দেখা দেয়। তার মানে হলো, আমরা এখনো প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে পারিনি।
বিশেষ করে নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো। এ জন্যই এখনো আমরা একটি সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যে আছি। কিন্তু এবার যে ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে, তা অতীতে দেখা যায়নি। চাপটি হলো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার চাপ।
এ রকম পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ নতুন করে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। এ রকম পাল্টাপাল্টি চলতে থাকলে সংঘাত হওয়ার এবং পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাওয়ার আশঙ্কা আছে; যা দেশের জন্য সুফল বয়ে আনবে না।
আমি মনে করি, সংকটের সমাধান রাজনৈতিক সংলাপের মাধ্যমেই হতে পারে। কিন্তু সে রকম কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। সংঘাত থেকে উত্তরণের পথও দেখা যাচ্ছে না। আমাদের দেশে সুশীল সমাজও খুব দুর্বল বা নেই বললেই চলে। তারাও কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিতে পারছে না। আবার সরকারের ভেতর থেকেও তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
এ রকম পরিস্থিতিতে বিদেশিরা বিশেষ করে পশ্চিমাদের তৎপরতা বেশি দেখা যাচ্ছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্যই তাদের এই তৎপরতা। আমি মনে করি, আমাদের দেশের রাজনীতিবিদদের কারণেই বিদেশিদের এই তৎপরতা বা হস্তক্ষেপ। এবার যদি গণতান্ত্রিকভাবে সুষ্ঠু ও ঠিকঠাকমতো নির্বাচন না হয়, তাহলে দেশের ভবিষ্যতের জন্য খুবই খারাপ হবে। আমাদের একটি কথা মনে রাখতে হবে, বৈদেশিক বাণিজ্যের বড় অংশই কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে।
আমি মনে করি, একটি বড় রাজনৈতিক দল যদি নির্বাচনে অংশ না নেয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। এখন পর্যন্ত সে রকম আশঙ্কাই দেখা যাচ্ছে। তবে সমাধানের পথ এখনো খোলা আছে। সরকার আলোচনার উদ্যোগ নিয়ে সব পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি পরিবেশ তৈরি করে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারে।
লেখক: এম সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার এবং এসআইপিজির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো (এনএসইউ)।