জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি, বিয়োগান্ত ঘটনা। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড একটি সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। খুনিরা শুধু বঙ্গবন্ধুকে শারীরিকভাবেই হত্যা করেনি, খুনিরা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের আত্মাকেই হত্যা করে পাকিস্তানি আত্মাকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের দেহে প্রতিস্থাপন করতে চেয়েছিল। তাই খুনিরা সংবিধান থেকে চার নীতি মুছে ফেলে।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচন সভায় এসব কথা বলেন ইনু। জাসদের কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির উদ্যোগে রোববার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট সেমিনার হলে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় হাসানুল হক ইনুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু। আরও বক্তব্য রাখেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড দিলীপ বড়ুয়া, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, বাসদ (খাজা)-এর আহবায়ক রেজাউর রশীদ খাজা, জাসদের সহসভাপতি মীর হোসাইন আখতার, সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শফি উদ্দিন মোল্লা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান মুক্তাদির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শওকত রায়হান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নইমুল আহসান জুয়েল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মোহসীন, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুজ্জামান বাদশা, ঢাকা মহানগর পশ্চিম জাসদের সভাপতি মো. নুরুন্নবী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাসদের সভাপতি হাজি ইদ্রিস ব্যাপারী, জাতীয় কৃষক জোটের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল আমিন, জাতীয় যুব জোটের সাধারণ সম্পাদক শরীফুল কবীর, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (ননী-মাসুদ) কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাশিদুল হক ননী প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চুন্নু।
এ সময় হাসানুল হক ইনু বলেন, ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা তুলে এনে রাষ্ট্র ও সমাজে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিয়েছিল ১৫ আগস্টের খুনিরা। তাঁরা স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের নাম-নিশানা মুছে দিতে বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করে রেখেছিল। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের চিরশত্রু স্বাধীনতা বিরোধী পাকিস্তানপন্থী রাজাকার-আলবদরদের সমাজে-রাষ্ট্রে-রাজনীতিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে। বাংলাদেশকে পাকিস্তানের পথে ঠেলে দিয়েছে তাঁরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমির হোসেন আমু বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ২১ বছরে খালেদা জিয়ার ১০ বছর, বিভিন্ন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নামে যারা দেশ পরিচালনা করেছেন, তাদের ধারাবাহিকতা, তাদের রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ, মানসিকতা সবকিছু ছিল পাকিস্তানি ভাবধারার। খালেদা জিয়ার ১০ বছরে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে দেওয়া হয়নি। আর বিকৃত ইতিহাস রেডিও, টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। এ দেশের যা কিছু অর্জন তা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। এ দেশের মানুষের মনের ব্যথাকে বাদ দিয়ে একটি নতুন ধারা দিতে চেয়েছে তারা।
আমির হোসেন আমু আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বিএনপি নব্য পাকিস্তান নয়, পাকিস্তানের সঙ্গে একটা কনফেডারেশন করার চেষ্টা করেছে। আজকে তারাই বিভিন্ন নামে বিভিন্ন কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করে, বিপথগামী করে এবং আন্দোলনের নামে এই দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করে, দেশকে একটি সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্পের দিকে টেনে নিতে চায়।