আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রিজভী বলেন, ভারত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। সেখানে গণতন্ত্রের ঐতিহ্য আছে। সেই ভারত সরকার সরাসরি কীভাবে একটি ‘অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারের’ পক্ষে অবস্থান নেয়! তারা মুখে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে আছে বললেও বাংলাদেশের ১৮ কোটি জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে, যা অতীব দুঃখজনক।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির এই নেতা এসব কথা বলেন।
‘ভারতের সমর্থনে আওয়ামী লীগ ১৫ বছর ধরে দেশকে লুটে নিচ্ছে, কেউ ভোট দিতে পারছে না’ অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ভারত নিজে একটি গণতান্ত্রিক দেশ, কিন্তু তারা সমর্থন করছে বাংলাদেশের বিনা ভোটের একটি সরকারকে। তার মানে তাদের কাছে বাংলাদেশের ভৌগোলিক স্বাধীনতা ও জনগণ কোনো গুরুত্ব বহন করে না। তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ একটি রাজনৈতিক দল। তারা এই আওয়ামী লীগের মাধ্যমে বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
ভারতের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করে রিজভী বলেন, যারা পানির ন্যায্য হিস্যা, সীমান্ত হত্যা, একচেটিয়া বাণিজ্য এসব নিয়ে প্রতিবাদ করে; ভারত তাদের বৈরী মনে করে। আর যারা তাদের সমর্থন করে, তাদের প্রতি খুশি। তিনি বলেন, ভারত সরকার বাংলাদেশের জনগণকে প্রতিপক্ষ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ ভারতের জনগণকে বন্ধু বলে মনে করে।
রুহুল কবির রিজভী আওয়ামী লীগ সরকারকে চীন ও রাশিয়ার সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, তাদের দেশে ঐতিহ্যগতভাবেই কর্তৃত্ববাদী সরকার কার্যকর রয়েছে। ফলে তারা একটি কর্তৃত্ববাদী সরকারের কার্যক্রমকে সমর্থন দিতে পারে। কিন্তু গণতান্ত্রিক ভারতের সমর্থন অত্যন্ত দুঃখজনক।
নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, বিএনপিসহ প্রধান বিরোধী দলগুলো ছাড়া এই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হতে পারে না। বিএনপিকে ভাঙার জন্য সরকার নানাভাবে চেষ্টা করেছে, লোভ দেখিয়েছে। তবে নিকৃষ্ট কিছু লোভী ছাড়া কেউ তাদের কাছে যায়নি। যারা লোভে পড়ে এই পাতানো নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, তারা ইতিহাসের ভাগাড়ে পড়বে।
নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিচার বিভাগ, শিক্ষা বিভাগসহ সবকিছু সরকার নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী। তিনি বলেন, তারা (বর্তমান সরকার) যেকোনোভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমরা ক্ষমতা চাচ্ছি না। আমরা চাই অবাধ নির্বাচন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ না করলে নির্বাচন অবাধ হবে না। কিন্তু তিনি পদত্যাগ করতে চান না। কারণ, তিনি নিজের মতো করে নির্বাচনটি সাজিয়ে নিতে চান।’
দলীয় নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও মামলা প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, দেড় লাখের বেশি মামলা হয়েছে, দুই কোটির বেশি নেতা-কর্মী ঘরছাড়া। গ্রেপ্তার করে নেতা-কর্মীদের নির্যাতন করা হচ্ছে। জেলখানায় তাঁদের মৃত্যু ঘটছে।