আমার মতো নেতাদের শেষ করে দেওয়া হবে: আদালতে মির্জা আব্বাস

২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সহিংসতায় পুলিশ সদস্য নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বুধবার মির্জা আব্বাসকে ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়
ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

আদালতে দাঁড়িয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, তাঁর মতো নেতাদের শেষ করে দেওয়া হবে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এক সময় রাজনৈতিক নেতাশূন্য হবে, যেদিন কোনো রাজনৈতিক নেতা থাকবে না।

২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সহিংসতায় পুলিশ সদস্য নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বুধবার মির্জা আব্বাসকে ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। ওই আবেদনের শুনানিতে আদালতের উদ্দেশে এসব কথা বলেন তিনি।

মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার মির্জা আব্বাসকে বুধবার দুপুর ১২টার দিকে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) গাড়িতে করে আদালতে নেওয়া হয়। তাঁকে আদালতের হাজতখানা থেকে এজলাস কক্ষে হাজির করা হয় বেলা আড়াইটায়।

জনাকীর্ণ আদালতে মির্জা আব্বাসকে রিমান্ডে নেওয়ার স্বপক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরছিলেন আইনজীবীরা। তখন মির্জা আব্বাস আদালত কক্ষে বসে ছিলেন। একপর্যায়ে তিনি উঠে দাঁড়িয়ে আদালতের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি কিছু কথা বলতে চাই।’ তখন বিচারক শফি উদ্দিন এই বিএনপি নেতাকে কথা বলার অনুমতি দেন।

মির্জা আব্বাস তখন ডায়েসে গিয়ে কথা বলতে শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘মাননীয় আদালত, আমার রাজনীতির বয়স ৫০ বছর। আমার হাতে বিএনপির জন্ম। জীবনে বহু মিটিং করেছি। এরশাদ সরকারের পতন ঘটিয়েছি। গত ১৫ বছর ধরে আন্দোলন করছি। মাননীয় আদালত, কখনো কি দেখেছেন, এমন কোনো গণ্ডগোল হয়েছে?’ তিনি বলেন, ‘আমার মতো নেতাদের শেষ করে দেওয়া হবে। এক সময় বাংলাদেশ নেতৃত্বশূন্য হবে, যে দিন কোনো নেতা থাকবে না।’

মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘মাননীয় আদালত, ফিউচার রেফারেন্সের জন্য আমি এসব কথা বলে গেলাম। কী হবে বলতে চাই না। নেতৃত্বশূন্য করে দেওয়া হবে।’

এর আগে মির্জা আব্বাসের আইনজীবী মোসলেহ উদ্দিন জসীম আদালতের কাছে অভিযোগ করেন, মামলায় মির্জা আব্বাসের বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ৫৩ বছর, যা সঠিক নয়। এ বিষয়ে মির্জা আব্বাস আদালতকে বলেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমার বয়স এখন ৭৪ বছর। পুলিশ কী লিখল জানি না।’

মির্জা আব্বাসের রিমান্ড আবেদনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু। তিনি আদালতকে বলেন, গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপি সমাবেশের নামে নৈরাজ্য করেছে, লাঠিসোঁটা নিয়ে জানমালের ক্ষতি করেছে। পুলিশকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। অগ্নিসংযোগ করেছে।

পিপি আবদুল্লাহ আবু আদালতকে আরও বলেন, ‘আন্দোলন হতে হবে অহিংস। কিন্তু সেদিন বিএনপি সমাবেশের নামে যা করেছে, সেটি গভীর ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয়।’
শুনানি শেষে আদালত মির্জা আব্বাসের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।