জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে সমাবেশে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে সমাবেশে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

অনেকে এই নির্বাচন বন্ধ করতে চেয়ে ব্যর্থ হয়েছে

আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেকেই এই নির্বাচন বন্ধ করতে চেয়েছিল, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনে মানুষ যাতে ভোট দিতে না আসে, সেটা ঠেকাতে চেয়েছিল; তারপরও ৪১ দশমিক ৮ ভাগ ভোট পড়েছে। এটা সোজা কথা নয়। এই কারণে যে এককভাবে আওয়ামী লীগ এবং এর সমমনা দল যখন নির্বাচন করেছে, আরেকটি দল তখন নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে।

গতকাল বুধবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এবং দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় উদ্‌যাপন উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন অত্যন্ত স্বচ্ছ, অবাধ, নিরপেক্ষ হয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নির্বাচনে রাতে ভোট দিয়েছে, দিনের ভোট রাতে দিয়েছে, ভোট কারচুপি হয়েছে, এসব বলার কোনো ক্ষমতা নেই।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আইন করে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিয়েছি। সেই নির্বাচন কমিশনকে আমরা নির্বাচন পরিচালনা করতে দিয়েছি। কোনোরকম হস্তক্ষেপ আমরা করিনি, সহযোগিতা করেছি।’

বেলা আড়াইটায় জনসভা শুরু হলেও সকাল থেকেই নেতা-কর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসতে শুরু করেন। নেতা-কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়ও অবস্থান নেন। বিকেল ৪টা ৪ মিনিটের দিকে আওয়ামী লীগের সভাপতি জনসভাস্থলে পৌঁছান। মঞ্চে উঠে জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে নেতা-কর্মীদের অভিবাদনের জবাব দেন। পরে গান পরিবেশন করেন শিল্পী ফকির শাহাবুদ্দিন ও মমতাজ বেগম।

বিকেল সাড়ে চারটার পর বক্তব্য শুরু করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। প্রায় আধা ঘণ্টার মতো দেওয়া বক্তব্যে তিনি আওয়ামী লীগের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরেন। একই সঙ্গে নির্বাচন এবং নির্বাচন বিরোধিতাকারীদের কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন। ভোট দিয়ে নির্বাচিত করায় জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী।

জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, শত বাধা, ভয়ভীতি, অগ্নিসন্ত্রাস—সবকিছু উপেক্ষা করে আজকে তারা নির্বাচন করেছে এবং নিজের ভোট নিজে দিয়েছে। স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানুষ ভোট দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসনের কর্মকর্তা, সশস্ত্র বাহিনীসহ যাঁরা নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের ধন্যবাদ জানাই।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘দীর্ঘদিন গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই আজকে বাংলাদেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতি হয়েছে। দারিদ্র্যের হার কমেছে। মানুষের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। মানুষের পুষ্টিনিরাপত্তা নিশ্চিত করছি। সাক্ষরতার হার বেড়েছে।’ তিনি বলেন, ‘সব দিক থেকে যখন বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, সারা বিশ্ব যেখানে বলে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল; তখন আমাদের দেশের ভেতরে কিছু আছে দালাল শ্রেণি আর কিছু বাইরের লোক, তাদের চোখে কিছুই ভালো লাগে না। মনে হয় যেন একটা অগণতান্ত্রিক সরকার আসলেই তারা খুশি।’

বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা আর কেউ ব্যাহত করতে পারবে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্বাস করি আওয়ামী লীগ আজকে ক্ষমতায় ফিরে আসছে বলেই বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা, এই অগ্রযাত্রা আর কেউ ব্যাহত করতে পারবে না।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না।

আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান (গোলাপ) ও উপপ্রচার সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীমের সঞ্চালনায় জনসভায় বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী, কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, মাহাবুব উল আলম হানিফ, দীপু মনি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ।