মালয়েশিয়া ‘সিন্ডিকেট বা চক্রের’ সঙ্গে জড়িত চার সংসদ সদস্যের (এমপি) বিরুদ্ধে সরকার কী ব্যবস্থা নেয়, তা জনগণ দেখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক। তিনি বলেছেন, সিন্ডিকেটের কারণে এই সরকারের আমলে তিনবার মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়েছে। তবে সরকার সতর্ক হয়নি।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন নুরুল হক। মালয়েশিয়াগামী শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার এবং ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদ।
বিক্ষোভ সমাবেশে নুরুল হক বলেন, ‘গণমাধ্যমে মালয়েশিয়া সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত চার এমপি—সাবেক অর্থমন্ত্রী মোস্তফা কামাল, ফেনীর নিজাম হাজারী, ঢাকার বেনজীর আহমেদ ও জাতীয় পার্টির এমপি মাসুদ উদ্দিনের নাম এসেছে। একজন অর্থমন্ত্রী তাঁর স্ত্রী-কন্যাকে নামিয়েছেন আদম ব্যবসায়। ফেনীর নিজাম হাজারীর বিরুদ্ধে এর আগেও পত্র-পত্রিকায় নিউজ হয়েছে।’
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি আরও বলেন, ‘তিনি (নিজাম হাজারী) ৪৫০ কোটি ৫০০ কোটি টাকায় ফেনীতে বাংলো করেছেন। এত টাকা তিনি কোথায় পেলেন? তাঁর পূর্বপুরুষ কি কেউ জমিদার ছিলেন? সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা বলে। ওবায়দুল কাদের অনেক কথা বলেন। অথচ ওবায়দুল কাদের ফেনীতে গেলে তাঁর বাসায় থাকেন। তাঁরা সরকারের ঘনিষ্ঠ।’
সরকার কি পারবে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে, এমন প্রশ্ন রেখে নুরুল বলেন, জনগণ দেখতে চায়, সরকার মালয়েশিয়া সিন্ডিকেটে জড়িত চার এমপির বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়।
সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে আজিজ-বেনজীর তৈরি করেছে বলে দাবি করেন ডাকসুর সাবেক এই ভিপি। তিনি বলেন, ‘বেনজীর স্ত্রীর নামে সম্পদ ক্রয়ে সম্রাট শাহজাহানকেও ছাড়িয়ে গেছে। সরকারের দুর্নীতি-অনিয়ম, লুটপাট নিয়ে কথা বললে, ওবায়দুল কাদের বিএনপি ১৮-২০ বছর আগে কী করেছে, সেটার সঙ্গে তুলনা করে। এ রকম একটা অপদার্থ ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে আমরা আছি। শুধু মালয়েশিয়া নয়, মধ্যপ্রাচ্যেও আমাদের শ্রমবাজারে সংকট। মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশি ইমামদের সুযোগ থাকলেও সরকারের অযোগ্যতার কারণে আমরা কাজে লাগাতে পারছি না।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আবদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা, গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, শহিদুল ইসলাম, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মুনতাজুল ইসলাম প্রমুখ।