গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, এই দেশে যে ভয়ের রাজত্ব তৈরি হয়েছিল, আবু সাঈদ তাঁর সৎ সাহস দিয়ে তা ভেঙে দিয়েছেন। লাখো কোটি তরুণের রক্তে আগুন লাগিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে এমন এক ঐক্য তৈরি করেছেন, যার ফলে এই ভয়ংকর শাসন, হত্যাযজ্ঞ ও গণহত্যা মোকাবিলা করে ছাত্র, তরুণেরা বিজয় ছিনিয়ে আনতে পেরেছেন।
আজ বুধবার দুপুরে রংপুরের পীরগঞ্জের জাফরপাড়া গ্রামে আবু সাঈদের বাড়িতে যান জোনায়েদ সাকি। সেখানে তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদের মা–বাবা ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন এবং সমবেদনা জানান।
জোনায়েদ সাকি তাঁদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘আমরা কথা দিচ্ছি, বাংলাদেশে আবু সাঈদ যে স্বপ্ন নিয়ে জীবন উৎসর্গ করেছেন, এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত আমরা প্রত্যেকে জীবন বাজি রাখব।’
বাংলাদেশের মানুষ আবু সাঈদের পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞ উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, আবু সাঈদ ১৮ কোটি মানুষের জীবন মুক্ত করে দিয়ে গেছেন।
এ সময় ছেলের হত্যাকারী পুলিশ ও নির্দেশদাতাদের বিচার দাবি করেন আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনে কারাগারে যাওয়া সব শিক্ষার্থীকে কারাগার থেকে মুক্ত করায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সন্তুষ্টির কথা জানান তিনি।
আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী বলেন, তাঁরা সাত ভাইয়ের মধ্যে আবু সাঈদ ছিলেন মেধাবী। তাঁরা কষ্ট করে আবু সাঈদকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করাচ্ছিলেন। কিন্তু কোটা সংস্কার আন্দোলনে তাঁর ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘাতকদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেন তিনি।
আবু সাঈদের আরেক ভাই আবু হোসেন বলেন, আন্দোলনে শেখ হাসিনার নির্দেশে ছাত্রদের নির্বিচার গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাই তাঁর বিচার করতে হবে। এ সময় জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশে সব খুনির বিচার হবে।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন যখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছিল, সেই সময় গত ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ। ২২ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।