জাতীয়তাবাদী ও ইসলামি শক্তির মধ্যে কোনো বিভেদ তৈরি না করার জন্য জামায়াতে ইসলামীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, গত ৫ আগস্টের বিজয়ের পর স্বৈরাচারের বিপক্ষে লড়াই করা দুটি বড় রাজনৈতিক দলের মধ্যে ভুল–বোঝাবুঝি ও দূরত্ব সৃষ্টিকে জনগণ অনাকাঙ্ক্ষিত বলে মনে করে।
আজ বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘দেশের বিরাজমান পরিস্থিতি ও জনগণের প্রত্যাশা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে শাহাদাত হোসেন এ কথা বলেন।
১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র বলেন, ‘৪২টি রাজনৈতিক দল যুগপৎ আন্দোলন করেছে। জামায়াত কখনো যুগপৎ আন্দোলনে ছিল, কখনো ছিল না। আমরা জাতীয়তাবাদী ও ইসলামি শক্তির একটি ঐক্য চাই। আমরা যারা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি, আমরা যেন ঐক্যবদ্ধ থাকি। আমাদের মধ্যে যেন বিভেদ-বিভ্রান্তি না থাকে। এটা গণতান্ত্রিক চেতনার জন্য, শহীদদের রক্তের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য অত্যন্ত জরুরি।’
শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘জামায়াতের প্রতি আমাদের বিশেষ বার্তা হচ্ছে, জামায়াতে ইসলামী ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্বাচনে গেছে। সেটা জনগণ মেনে নেয়নি। ১৯৯৬ সালে নির্বাচনে জামায়াত আলাদাভাবে নির্বাচন করেছে। এতে বিএনপি-জামায়াত উভয় দলই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাতে দেশে ফ্যাসিস্ট সরকার কায়েম হয়েছে। না হয় ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যেতে পারত না। এটার জন্য জামায়াত দায়ী। জামায়াতের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে, আমরা যারা স্বৈরাচারের পতনে রক্ত দিয়েছি, আমরা যেন একসঙ্গে পথ চলতে পারি।’
সংবাদ সম্মেলনে ১২ দলীয় জোটের ১৪ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে প্রশাসনে ফ্যাসিবাদের যেসব দোসর কর্মরত আছেন, তাঁদের অপসারণ, জেলা প্রশাসক নিয়োগে নতুন ফিট লিস্ট এবং যেসব জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের নিয়োগ বাতিল, ফ্যাসিবাদের সময়ের চুক্তিভিত্তিক সব নিয়োগ বাতিল করা।
১২ দলীয় জোটের প্রধান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, অনেক রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়কে যেকোনো মূল্যে সংহত করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে গণতন্ত্রের ভিত্তিকে মজবুত করে দেশকে সম্প্রীতির মাধ্যমে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ১২ দলীয় জোটের শরিক জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব শাহ আহমেদ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব আবদুল করিম, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিএনপির) চেয়ারম্যান ফিরোজ মো. লিটন ও নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি এম এ মান্নান।