আন্দোলনের কৌশল ও কর্মসূচি ঠিক করতে রাজনৈতিক মিত্রদের সঙ্গে আবার মতবিনিময় শুরু করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার প্রথম দিনে গণফোরাম, পিপলস পার্টি, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য ও জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) সঙ্গে পৃথক মতবিনিময় হয়। চারটি দল ও জোট ‘বাংলাদেশের মুক্তি, গণতন্ত্রের মুক্তি ও খালেদা জিয়ার মুক্তির’ বিষয়ে একমত হয়েছে। বিকেলে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে এ মতবিনিময় হয়।
মতবিনিময় শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানান, চলমান আন্দোলনকে আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে তাঁরা আন্দোলনে সহযোগীদের সঙ্গে বসছেন। তিনি বলেন, ‘আগামী দিনের কর্মসূচি কী হবে, জনগণের চাহিদা পূরণে আমরা কী করতে পারি এবং এই আন্দোলনের সফল সমাপ্তি কীভাবে করতে পারি, তা নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমাদের সবার রাস্তা এক, গন্তব্যস্থলও একটাই, সেটা হচ্ছে বাংলাদেশের মুক্তি, গণতন্ত্রের মুক্তি, খালেদা জিয়ার মুক্তি। বাংলাদেশের মানুষ এ ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ।’
গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের মহাসচিব হারুন আল রশিদ খান বলেন, ‘এই সরকারের পতন না ঘটিয়ে আমাদের আন্দোলন থেমে যাবে না।’
এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘আমাদের একটিমাত্র লক্ষ্য, বাংলাদেশের জনগণের হাতে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক সব অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া। এটা একমাত্র সম্ভব, যদি এই সরকারের পতন ঘটিয়ে নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের পছন্দের সরকার জনগণের হাতে তুলে দিতে পারি।’
বিএনপি জানিয়েছে, কর্মসূচি চূড়ান্ত করতে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সঙ্গে মতবিনিময় চলবে। শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ লেবার পার্টি ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সঙ্গে মতবিনিময় হবে। এরপর রাত আটটায় অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে মতবিনিময় হওয়ার কথা রয়েছে।
ইতিমধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি, নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, সরকারের দুর্নীতি ও ভারতের সঙ্গে দেশের ‘স্বার্থবিরোধী’ চুক্তির প্রতিবাদে গণসংযোগসহ কর্মসূচির সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
কর্মসূচিগুলো বিষয়ভিত্তিক হবে, নাকি একসঙ্গে মিলিয়ে করা হবে, সেটি জানা যায়নি। একই সঙ্গে কর্মসূচিগুলো কতটা যুগপৎ, কতটা বিএনপি একা করবে, সেটিও এখনো পরিষ্কার নয়। শিগগির বিএনপি কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে দলটির দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে চলমান আন্দোলন নিয়ে আমীর খসরু সরকারপ্রধানের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘লাখ লাখ মানুষের জনসভা আপনি গুলি করে, টিয়ার গ্যাস মেরে ভন্ডুল করে দিয়ে, এরপর ডামি নির্বাচন করে ক্ষমতা দখল করে যদি মনে করেন, আন্দোলন শেষ হয়ে গেছে, সেটি ভুল। আন্দোলন শেষ হয়ে যায়নি, আন্দোলন আরও শক্তিশালী হয়েছে। আজকে জনগণ আরও দৃঢ় চিত্তে এই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছে এবং তারা এক দিনও অপেক্ষা করতে রাজি নয়।’