বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাজনীতিও করতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী কেউ যদি দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত হন, তাহলে তিনি নির্বাচন করতে পারেন না। খালেদা জিয়া দুই বছরের অনেক বেশি সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। সুতরাং নির্বাচন করার প্রশ্নই আসে না। তাঁর শারীরিক অবস্থা এবং বয়স বিবেচনায় তাঁকে শর্ত সাপেক্ষে কারাগারের বাইরে ঘরে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেই শর্ত অনুযায়ী তিনি রাজনীতিও করতে পারেন না।
দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হলেও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২০২০ সালের মার্চ থেকে সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে রাজধানীর গুলশানের বাসায় অবস্থান করছেন। সরকারের নির্বাহী আদেশে প্রথমে ছয় মাসের জন্য শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি পান খালেদা জিয়া। এরপর থেকে ছয় মাস পর পর এই মেয়াদ বাড়ায় সরকার। অন্যতম শর্ত হলো খালেদা জিয়া দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। তবে দেশের মধ্যে চিকিৎসা নিতে পারবেন।
একুশে ফেব্রুয়ারি সকালে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার সময় বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে বলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলের অভিযোগের বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এটি গায়েবানা অভিযোগ। গত বছর আমরা আমাদের মিছিলের পাশ দিয়ে বিএনপির মিছিল যেতে দিয়েছি, তারা ফুল দেওয়ার পর আমরা ফুল দিয়েছি। এতে আমাদের সাড়ে তিন ঘণ্টা বেশি সময় লেগেছিল। এ বছর আমরা ফুল দিয়ে ৩০ সেকেন্ড নীরবে দাঁড়িয়েছিলাম, পুরোপুরি এক মিনিটও না, তারপর চলে গেছি। বিএনপি দেরিতে শুরু করেছে এবং তখন শহীদ মিনারে ভিড় হয়ে গেছে। তাদের কে কোথায় বাধা দিল!’
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘রাষ্ট্রের চেতনার বেদিমূলে আঘাতকারী গোষ্ঠী এখনো সক্রিয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে তারা মাঝেমধ্যেই ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টা করে। এদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’
হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা এই মাটির, এই দেশের সন্তান। এই মাটি আপনাদের পূর্বপুরুষের। আপনাদের অধিকার রক্ষায় আওয়ামী লীগ সরকার যেমন পাশে আছে, আপনাদের নিজেদেরও সেই অধিকার রক্ষায় সোচ্চার থাকতে হবে, প্রয়োজনে অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।’
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর টিকাটুলীতে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে শ্রী রামকৃষ্ণের ১৮৮তম জন্মতিথি ও রামকৃষ্ণ মিশনের ১২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ, স্বামী দেবাধ্যানন্দ ও ভক্তরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় সব ধর্মের পাশে আছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যারা ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টা চালায়, তাদের হাতে দেশ পরিচালনার ভার গেলে দৃশ্যপট বদলে যাবে, সেটি মনে রাখার বিনীত অনুরোধ জানাই।’