মির্জা আব্বাস
মির্জা আব্বাস

হাসিনাবিহীন বাংলাদেশ পেয়েছি, এখন আওয়ামীবিহীন বাংলাদেশ করতে হবে: মির্জা আব্বাস

‘শেখ হাসিনাবিহীন বাংলাদেশে একটা শান্তি আছে’ বলে মন্তব্য  করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেছেন, ‘আমরা বলতাম হাসিনাবিহীন বাংলাদেশ চাই। আজকে হাসিনাবিহীন বাংলাদেশ পেয়েছি, এখন আওয়ামীবিহীন বাংলাদেশ করতে হবে।’

২০০৬ সালে ২৮ অক্টোবর ‘আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের লগি-বইঠার তাণ্ডবের প্রতিবাদে’ আজ সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত এ আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস এ কথা বলেন।

২৮ অক্টোবরের ঘটনায় মামলা করার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘লগি-বইঠার তাণ্ডবে যাঁরা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের পরিবার মামলা করেন। ৪০ বছর পর যদি শেখ মুজিব হত্যার বিচার হয়, তাহলে ৮০ বছর পর হলেও ২৮ অক্টোবরের বিচার হতে হবে।’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আওয়ামী লীগ চলে গেছে, আমরা ভেবে ভেবে খুশি হই। কিন্তু খুশি হওয়ার কোনো কারণ নেই। এদের চর-অনুচর এখনো বাংলাদেশের রাজনীতি, সংস্কৃতি, সচিবালয়, পুলিশ, মিলিটারি—যেখানে বলেন রয়ে গেছে। এদের রেখে কোনো পরিস্থিতিতেই আপনি পরিপূর্ণ গণতন্ত্র বাংলাদেশে কায়েম করতে পারবেন না। আওয়ামী লীগ কখনো ছেড়ে দেবে না, ষড়যন্ত্র চলছে বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন মাধ্যমে। আজকে এই থিওরি (তত্ত্ব) আসে, পরশু ওই থিওরি আসে। এ থিওরি আবার দুর্ভাগ্যবশত আমাদের মুখ থেকে বের হয়।’

সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী, বিএনপি ও অন্যান্য দল বিভিন্ন কথা না বলে যদি একটি কথায় আসতে পারি, যদি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে পারি, তাহলে দেশটা পুনর্গঠিত হবে। না হলে এই দেশটা নিয়ে সারা জীবন আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত কিন্তু খেলতেই থাকবে। এটা কখনোই হতে দেওয়া যাবে না।’

এ প্রসঙ্গে মির্জা আব্বাস বিগত আন্দোলনে একসঙ্গে হতে না পারার বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘বিগত দিনে কোনো এক সময় হয়তো আমরা একসঙ্গে হতে পারিনি। কোনো এক সময় হয়তো একসঙ্গে হয়ে আওয়ামী লীগকে তাড়িয়েছিলাম। আমরা আগামী দিনে সব সময়ের জন্য দেখি চেষ্টা করতে পারি কি না। একসঙ্গে হয়ে এই দেশটাকে আবারও সুন্দর করে পুনর্গঠিত করতে পারি কি না।’

বক্তব্যে জামায়াতের সঙ্গে নিজের অনেক দিনের ‘মিষ্টি-মধুর’ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, ‘২০০১ সালে (সংসদ নির্বাচন) জামায়াত নেতৃবৃন্দ আমার জন্য কাজ করেছিলেন, আলাদা টিম করে সহযোগিতা করেছেন। তাঁরা প্রতি রাতে দেখা করে যেতেন। নিজামী, মুজাহিদ, সাঈদী, মীর কাশেম আলীদের সঙ্গে আমি জেল খেটেছি। জেলে তাঁদের কাছ থেকে চিনেছি। ১৭ বার জেলে গেছি আওয়ামী লীগের আমলে। হাসি-কান্নার মধ্য দিয়ে আমাদের দিনগুলো কেটে গেছে। সেই কষ্টের বিনিময়েই হয়তো আমরা গত ৫ আগস্ট ফসল ঘরে তুলে নিয়েছি। কিছু পাই না পাই, শান্তি একটা আছে, তা হলো দেশে হাসিনা নাই।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।