বনানী ক্লাবে খেতে গিয়ে বিএনপির ৫৪ নেতা–কর্মী গ্রেপ্তার

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর বনানী ক্লাব থেকে বিএনপির ৫৪ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে বনানী থানা ও ডিবি পুলিশ। আটক সবাই মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান ও শ্রীনগরের উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মী। এর মধ্যে শ্রীনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মমিন আলী, শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হেসেন এবং সিরাজদিখান উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন রয়েছেন। মমিন আলী গত জাতীয় নির্বাচনে মুন্সিগঞ্জ–১ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ছিলেন।

বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, মূলত মমিন আলীর আমন্ত্রণে সিরাজদিখান ও শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির প্রায় অর্ধশত নেতা-কর্মী বনানী ক্লাবে যান। মমিন আলী এই ক্লাবের সদস্য। তিনি প্রায় নিয়মিতই বনানী ক্লাবে যান। গতকালও সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে খাওয়ার জন্য সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এর মধ্যে খবর পেয়ে গত রাত একটার দিকে পুলিশ তাঁদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে তাঁদের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সকালে তাঁদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দিয়েছে পুলিশ।

বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা (বিএনপির নেতা-কর্মীরা) ক্লাবে বসে গোপনে রাষ্ট্রবিরোধী পরিকল্পনা করছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দেওয়া হয়েছে।

থানা সূত্রে জানা গেছে, ৫৬ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়েছে। দুজনকে পলাতক দেখানো হয়েছে।

মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব কামরুজ্জামান রতন প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁরা ক্লাবের নিয়মকানুন মেনেই সেখানে গেছেন, প্রকাশ্যে বসেছেন, খাওয়াদাওয়া করেছেন। এমন প্রকাশ্য জায়গায় বসে রাষ্ট্রবিরোধী পরিকল্পনা বা গোপন বৈঠক করার কি সুযোগ আছে? এই সরকার যে দানবে রূপ নিয়েছে, বিনা কারণে, বিনা মামলায়, এতগুলো মানুষকে গ্রেপ্তার করা তারই প্রতিফলন।’

এ দিকে গতরাতে নেত্রকোণা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ও সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আয়নাল হককে বাসা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ঢাকার বনানী ও নেত্রকোণা থেকে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে দেশটা এখন আওয়ামী লীগের পৈতৃক সম্পত্তি। দেশের মানুষকে ব্যক্তিগত কিংবা সামাজিক অনুষ্ঠানেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। সারা দেশে বিএনপির নেতা–কর্মীদের বাড়ি গিয়ে প্রতিনিয়ত তল্লাশীর নামে হয়রানি করা হচ্ছে। অবৈধ সরকার বিরোধীদল শূন্য করে নিজেদের একচ্ছত্র শাসন দীর্ঘায়িত করার গভীর চক্রান্তে লিপ্ত। এ কারণেই তারা এখন বিএনপিসহ বিরোধী দলের গ্রেপ্তার মরিয়া হয়ে উঠেছে।

বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব অবিলম্বে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার এবং তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।